Posts

Showing posts from June, 2021

বরষা মুখর - অরবিন্দ সরকার

          বরষামুখর        অরবিন্দ সরকার    বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ। কৃষ্ণবর্ণ কেশ ধূম্র     হুঙ্কার গর্জনে, বারিপাত চারিধারে  চমকি বিজলী, পশুপক্ষী শুষ্ক মুখ   খাবার বিহনে, নদীনালা খালবিল    ভ'রপুর ডালি। চাষীরা লাঙল ঘাড়ে   মাঠে করে চাষ, বীজ রোপণ ধানের   মস্তকে মাথাল, পথেঘাটে মাছব্যাঙ   ছাড়ে নন্দশ্বাস, ছেলেপুলে মাছ ধরে   পথে ফেলে জাল। সর্দি কাশি জ্বরজ্বালা   বরষার রোগ, ধণীর রেইনকোর্ট      গরীবের বস্তা, বন্যার ভ্রুকুটি মেলে   ক্ষতির  দুর্ভোগ ত্রাণকার্যে কারচুপি    মৃতদেহ সস্তা। কারো পৌষমাস আসে   কারো সর্ব্বনাশ, আশায় চাষারা খাটে     অনিশ্চিত আশ। ৩০/০৬/২০২১

হৃদ মাঝারে রবি ঠাকুর - সৌভিক দেবনাথ

Image
হৃদ মাঝারে রবি ঠাকুর          সৌভিক দেবনাথ  হে কবিস্রষ্টা; কেবলই কবি নহে তুমি। তুমি সে বিপ্লব, যাহার ভাবনায় প্রস্ফুটিত হইয়াছিল হাজারো বিপ্লবী।  তুমি সে প্রানপুরুষ; যাহার ভাবনায় আজও জাগে প্রেম তোয়ধিতে জোয়ার, যাহার কলমের আঁচড়ে ভাঙ্গিয়াছিলো ধর্ম বিদ্বেষের বেড়া। হে প্রাননাথ, আজি দিবসে আসিয়াছো তম এ মেদিনীতটে। ভূধর কান্তার কাঁপিয়া উঠিয়াছিল সেথা তম আগমনি বার্তায়। গর্জিয়া উঠিয়াছিলো গগন, মনবিহঙ্গে আসিয়াছিল জোয়ার। হে আদিনাথ! রবিশূন্য করিয়া তুমি গমন করিলেও, রবিশূন্য হয়নি এ হৃদয়।  আজও সর্বললাটে বাজিয়া ওঠে তম জয়গান। আজও তম সমীরণ প্রবাহে  শিহরিত হয় বিটপীপত্র, শিহরিত হয় বাঙালিয়ানা। এবে তম আসিয়াছে লইবার পালা_ হে কাব্য নৃপতি!  আজি এ লগনে, গ্রহন করিও এ জয়মাল্য খানি। বহিয়া যাক তবে তোমারি পরশে, সৌদামিনী সম লহরী মম তনুতে।

নদীর পরিণতি - অরবিন্দ সরকার

       নদীর পরিণতি         -- অরবিন্দ সরকার        বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ পাহাড় পর্ব্বত থেকে  বা জোয়ার জলে, সৃষ্টি কোলাহল রব    কুলুকুলু ধ্বণি, নগর শহর গ'ড়ে    পলিমাটি স্থলে, ভাঙাগড়া নিত্যনব   পবিত্রতা রানী। গ্রীষ্ম তাপদাহে ঠাণ্ডা   শীতল আবেশ, ঊর্ব্বর মাটি শষ্যের   জনবসতি কূলে, বাঁধ দিয়ে ধ্বংসলীলা  গতিপথ শেষ, রুক্ষ মরুভূমি হবে    মানুষের ভুলে। তীর্থস্থান নদীতীরে   জলের জোগান, জল বিনা জীবজন্তু   ওষ্ঠাগত প্রাণ, ছাতি ফাটে মাতৃডাকে  বিমাতা তো নন, উৎপত্তির নিষ্পত্তিতে    সবাই সমান, সৃষ্টির পতনানন্দে    কত মাতামাতি, তার আগেই বিনাশ   মনুষ্যত্ব জাতি। ২৯/০৬/২০২১     

পরিযায়ী শ্রমিক - পলাশ সিকদার

Image
পরিযায়ী শ্রমিক     পলাশ সিকদার একজন পরিযায়ী শ্রমিক আমি, জীবন আমাদের খুবই কমদামী। মাকড়শার মত দেওয়াল বাওয়া র কাজ, যা সত্যি তা বলতে নেই কোনো লাজ। একটা ময়লা কাথা পেতে রোজ শুই গায়ের জামা-প্যান্ট বালিশ করে মাথায় দেই। ঘুম আসেনা মনে পড়ে বৌ এর মুখ, ফোন করে দেখি, ব্যস্ত ফোনে সে  কারো সাথে ভাগ করছে নিজের সুখ। রক্ত বয়না শিরায় শিরায় বিস্ফোরিত হয়না বুক সয়ে গেছে, প্রতিদিন পেয়ে পেয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের এ দুখ।

------সমালোচনা ----সমরেশ হালদারের কবিতা--"মন নেই তোমার?" পলাশ সিকদার

Image
------সমালোচনা ---- সমরেশ হালদারের কবিতা-- "মন নেই তোমার? "         পলাশ সিকদার ---------------------------------------- বিকৃত কামনার আগুন চারিদিকে। ৮ থেকে ৮০ -- কেউই বাদ যায়না এই আগুনের লেলিহান শিখা থেকে। এই বিকৃত কামনার শিকার আমাদের সমাজ , আমাদের সভ্যতা। আমরা হয়তো ধীরে ধীরে আসক্ত হয়ে পড়ছি এর। যখন কোনও মা তার ছোট্ট শিশুর যৌনাঙ্গ সূচ ঢুকিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে তখন সত্যিই ভাবতে হয় আমাদের কতটা আসক্ত করে ফেলেছে।     তবে এটাই শেষ নয়। এই আগুনে এখনো কিছু মানুষকে কষ্ট দেয়। নারীর নিতম্ব বা বক্ষ খাঁজে নয় সৌন্দর্য খুজেঁ পায় প্রজাপতির পাখায়, পাখির কলতানে।       সবশেষে কবির আহ্বান নিভে যাক কামনার আগুন, বৃষ্টিতে শীতল হোক উত্তপ্ত শরীর। আগামী দিনগুলো সুন্দর হোক। তবে সুরঞ্জনাকে কেন আনা হলো, তাকে কেন দোষারোপ করা হলো বোধগম্য হলোনা। এই বিকৃত যৌনতার জন্য কোনো নারীকে তো দোষারোপ করা যায়না। পুরুষ বাচক কোনও উপমা যুক্তি সংগত ছিল।

মন নেই তোমার ? - সমরেশ হালদার

মন নেই তোমার ?         সমরেশ হালদার      ( দূর্গাপুর , ভারত       ২৭,০৬,২০২১) উত্তাল বিকৃত যৌনতার আগুন ভেঙ্গে চুরমার কচিকাঁচা স্বপ্ন সুখ চারিদিকে দাউ দাউ আগুন কোথায় দাঁড়াব বলো - ঘুম আসেনা তোমার সুরঞ্জনা    ছোট্ট মেয়েটার যখন অকস্মাৎ যৌনাঙ্গ ফাটে বুক ফাটে না তোমার ? কাঁদো নাই কখনও ? যখন ফুল ফোটে গাছে , গাছের পাতায় যখন প্রজাপতি বসে , শিষ্ দেয় , কিচিরমিচির ডাকে , জানলায় যখন বাতাস আসে মন কাঁপে না তোমার ? তোমার মন নেই সুরঞ্জনা ? শুধু শরীর নিয়ে কেমন বাঁচা , একটা স্থবির নিটোল শরীর নিয়ে সারাটাক্ষণ আগুন জ্বালাও কখনো ভেজো নাই তুমি বর্ষায় তপ্ত রোদে গা ভেজানো , মন ভেজানো প্রবল বেগে জীবন জুড়ে বৃষ্টি আসুক শান্ত হোক সমস্ত যৌনতা বৃষ্টিতে ভেসে যাক বিকৃত যা কিছু ফর্সা হোক সমস্ত সকাল ।।

প্রকৃতির অবদান - দিলীপ কুমার দাস

Image
প্রকৃতির অবদান  দিলীপ কুমার দাস  ঋতুর এই বৈচিত্র্যময় অপরূপ সৌন্দর্যে প্রকৃতির রূপ নতুন সাজ  বৃষ্টিতে ভিজে পাতা গুলো  গাঢ় সবুজের রঙে রাঙানো আজ। মনের মাঝে মধুর সুর বাজে আকাশে কালো মেঘের নৃত্য ইচ্ছা জাগে হৃদয় মাঝে  বৃষ্টিতে ভিজে হই সিক্ত। আষাঢ়ে সাদা মেঘের ভেলা  ভেসে যায় বহুদূর,  মন পাখি উড়ে বেড়াতে চায় পাড়ি দিতে সাত সমুদ্দুর।  হঠাৎ করে মুষলধারে বৃষ্টি তুমি  নেমে আসোএই ধরনীর বুকে বৃষ্টি ভেজা অনুভূতির প্রকাশ ফোটে উঠে চোখে মুখে।  খাল-বিল নদীনালা তোমার জলে  ফিরে আসে ভরা যৌবন  লাল সাদা শাপলা ফুল ফোটে  তোমাকে জানায় সাদর সম্ভাষণ।  বৃষ্টি তুমি বড়ই উপকারী  গাছকে করো নতুন জীবন দান  আমরাও বেঁচে থাকার ভরসা পাই অনস্বীকার্য প্রকৃতির অবদান। তারিখ - ২৮/০৬/২১

ভালোবাসা রয়ে যায় - সন্তু প্রামাণিক

Image
ভালোবাসা রয়ে যায় সন্তু প্রামাণিক ২৮/০৬/২১ তারপর বদলে গেলো সময়টা, প্রতিশ্রুতির এক একটা কথা আজ অর্থহীন। অশ্রু গড়িয়ে গড়িয়ে আঁখিদ্বয়- ধূসর, বিবর্ণ। অনেক কালের অযত্নে- অভিমানের পাহাড় আকাশ চুম্বি। পথ আজ চলে গেছে অন্যপথে, মোহনা ছাড়িয়ে আরো অনেক দূরে। অথবা মরু পাহাড়ের একাকী চূড়ায় কথাগুলো আর ফিরে আসে না। আসে একঝাঁক নিস্তব্ধ দীর্ঘশ্বাস। মুছে ফেলি রক্তরাঙা পলাশের দাগ, হৃদয়ের উদ্যানে প্রেমের ইতিহাস। আমিও অন্যপথে। এখন শুধু স্মৃতিভ্রমের অপেক্ষা। আমিও ভুলে যেতে চাই। আবার নতুন শুরু। একটা নতুন অধ্যায়। তোমার ভালোবাসা স্মৃতিহীনতায় ভুগুক, তবু আমার ভালোবাসা  ভালোবাসায় রয়ে যায়।      

নারীর অলংকার! মান্ডালা আর্ট।অঙ্কনে- সুদেষ্ণা দাস।

Image
নারীর অলংকার!  মান্ডালা আর্ট। অঙ্কনে- সুদেষ্ণা দাস।

টুং টং ফিস ফিস - দেবারতি গুহ সামন্ত

টুং টং ফিস ফিস দেবারতি গুহ সামন্ত আমার ফোনের চার্জটা না শেষের দিকে, গোদের ওপর বিষফোঁড়া,নেট ব‍্যালেন্সএর ভ‍্যালিডিটিও অল্প। উপরি পাওনা,সেই সন্ধ‍্যে থেকে কারেন্ট নেই, কেমন যেন পাগল পাগল লাগছে নিজেকে। মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়লেও বুঝি, এত মনখারাপ হত না। বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে,সঙ্গে কড়াৎ কড়াৎ বাজ, একা ঘরে মোমবাতির কাঁপা আলোয় ভূতের মত আমি। এমত অবস্থায় হঠাৎ টুং করে  আওয়াজ হল, সঙ্গে পুরুষালি গলায়,"এক্সকিউজ মি বস,ইউ হ‍্যাভ এ টেক্সট ম‍্যাসেজ"! বিশ্বাস করুন,চমকে উঠেছিলাম ভয়ানক, মোবাইল টা হাতে নিতেই ব‍্যটারিটা হয়ে গেল ডেড। রেড সিগন্যাল দিচ্ছিল অনেকক্ষণ থেকে‍, যেই এস এম এস টা ঢুকল,অমনি পেল অক্কা। যেমন প্রদীপ পুরোপুরি নিভে যাওয়ার আগে দপ করে জ্বলে ওঠে, এক্ষেত্রেও কেসটা অনেকটা সেরকমই। মনে মনে গালি দিচ্ছিলাম সেই  ম‍্যাসেজ প্রেরককে, কেন রে বাবা,একটু পরে পাঠালে কি মহাভারত অশুদ্ধ হত? সারাদিনই তো ফেসবুক,ওয়‍াটস আ‍্যাপ,মেসেঞ্জারের ছড়াছড়ি, টুং টুং শব্দ,সঙ্গে নোটিফিকেশন এর আলো,ফোনে ঢুকতেই আছে। তাছাড়া একগাদা গেমস,ভিডিও,মুভি ডাউনলোড তো আছেই, মেমরি হ‍্যাং হতে কতক্ষণ? বেশ ভয় ভয় করছে এখন আমার! এই গা ছমছ...

মহোৎসব (রম্যরচনা) -- অরবিন্দ সরকার

             মহোৎসব             (রম্যরচনা)       -- অরবিন্দ সরকার       বহরমপুর,মুর্শিদাবাদ। একটি রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা জঙ্গলে পরিপূর্ণ। সেখানে সব চোরেদের বাস। যতোই নামডাকওয়ালা হোক না কেন তারা সবাই এক একটা ডাকাত। গভীর জঙ্গলে তাদের আরাধ্যা দেবী মাকালী পূজিতা ।এখানে মদ, গাঁজা গুলি, সবাই ভক্ষণ করে‌ন।চুরি করার আগে দলবল এখানে হাঁটু গেড়ে  আরাধনা ক'রে দেবী কালিকার সম্মতিতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে রওনা হন। এইভাবেই ওদের চলে। ক্রমে একদিন ওদের ইচ্ছে হলো জঙ্গলের বাইরে দুর্গোৎসব দেখার। দলবেঁধে সদলবলে পূজো দেখতে বেরিয়ে মদ গাঁজা টেনে মন্দিরে হাজির। মন্দিরের মা মা ধ্বনি ও বাদ্যযন্ত্রের বাদন মন্দির প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে আকাশে বাতাসে মুখরিত। সবাই দেখে যে আগন্তুক জনতা তাদের স্নেহতুল্য সন্তানকে বলি দিচ্ছেন। ডাকাতের দলবলও মদের নেশায় মা মা চিৎকার ও জয়োধ্বনি দিয়ে নিজের ডেরায় ফিরে এলেন। আবার চললো প্রেমময়ী সুরাপান,আর গাঁজায় দম। সবাই জঙ্গলের নিশ্চুপ চেহারায় বললেন আমরা আজ নিজেরাই দেবী দুর্গার আরাধনা করবো। যেই বলা...

অসম কাহিনী - অমরেশ বিশ্বাস

Image
অসম কাহিনী  অমরেশ বিশ্বাস  অসম দেশের কথা ভাবার সময় আছে কারো  যদি থাকে তবে একটু ভেবে দেখতে পারো। সেথায় কোন ছেলেপুলের যদি থাকে কাকা তার ভাগ্যে আর হবে না জ্যাঠা বলে ডাকা। কাকা ডাকার সুযোগ হলে থাকবে না তার জ্যাঠা   অসম দেশে শুনছি এখন হয়েছে এক ল্যাঠা। যদি মামা থাকে কারো হবে না তার মাসী  ভাবতে পার আজব যত পেতেও পারে হাসি। ভাগ্যে যদি জোটে পিসি হবে না মামা কোন  আজব কথা নয়তো মোটেই সত্যি কথাই জেনো। থাকবে কারো শুধুই মাসী কাকা জ্যাঠা নয় দুটি বাচ্চার নীতি প্রয়োগ সত্যি যদি হয়। দুটি বাচ্চার বেশী যদি না হয় আর কারো  এটাই ভবিতব্য হবে ভেবেই নিতে পারো।

নেমকহারাম দেউড়ি- অরবিন্দ সরকার

        নেমকহারাম দেউড়ি            - অরবিন্দ সরকার          বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ         ২৭/০৬/২০২১   মীরজাফর তকমা   বেইমান নাম, মুর্শিদাবাদ আনাচে    হয় প্রতিধ্বনি, নাবালক সিরাজের    মসনদ ঋণী, আলীবর্দীর স্নেহের   নাতি বিধিবাম।  মীরজাফরের লক্ষ্য    কেদারা আরাম পলাশীর আম্রকুঞ্জে    বিশাল বাহিনী, ইংরেজ নগন্য সেনা     হ'ল বেইমানী, পরাজিত সুভারত     বিদেশীর ধাম। দিবাকর গেল ঢলে   পাশা মৃত্যু কোলে, দানশা ফকির ধ'রে    মীরনের হাতে, সিরাজের বক্ষে ছুরি   মহম্মদি বেগ লুৎফুন্নিশার কাকুতি   গে'ল রসাতলে, স্বপ্নসূর্য অস্তাচলে     অন্ধকার মাতে, ধূলিকণা রক্তভেজা    শায়িত আবেগ।

বেলা শেষে - ডঃ সুজাতা ঘোষ

Image
বেলা শেষে ডঃ সুজাতা ঘোষ বেলা শেষের নরম রোদ যখন পড়েছে বারান্দায় রাখা আচারের শিশি ডিঙিয়ে ঘরের মেঝেতে তখনই জানি, সূর্য অস্থ যাবে খানিক বাদে। গায়ের শীত চাদর টেনে নিলাম কান ঢেকে বন্ধ চোখে আমারও মনে পড়ল পুরনো হয়ে যাওয়া সব শীত, যা রেখে গেছে অনেক ভালোলাগার ওলট পালট বিছানার উষ্ণতায় আর পায়ে। এক ঝাঁক সবুজ পাখি নেচে নেচে উড়ে গেল দূরে সন্ধ্যে আরও গাঢ় হলে প্যাঁচারা আসবে কাছে ওরা দুজনে মুখোমুখি বসে ওই তেঁতুল গাছের ডালে। কত কথাই না বলে হেসে হেসে, ঘাড় ঘষে। একসময় অনেক রাত হবে, চাঁদ উঠবে মাঝ আকাশে পরীরা লুটোপুটি খাবে ফুলে ফুলে আর ঘাসে। আমি তাকিয়ে দেখব দূরে, অনেক দূরে। আর কটা শীত আসবে আমার জীবনে নাকি এটিই শেষ শীতের রেখা টেনে যাবে গালে! সকালের সূর্য দেখব কি কাল নতুন চোখ খুলে নাকি এ রাতই শুষে নেবে সূর্যের সকল আভা! ভয়ে ভয়ে চোখ খুলে তাকাই আর একবার হ্যাঁ, এখনো আছি, আর সবকিছু আমার। কত যুগ ঘুরে বেড়াই একা এই ঘরে ভাবি তুমি আসবে, ঠিকই আসবে এপারে কিন্তু আজও এলে না সেভাবে। এখন আমারও যাওয়ার সময় হয়েছে তবে, তাহলে কি ওপারেই দেখা হবে, আবার নতুন করে? পিছনে থাকবে পড়ে সমস্ত স্মৃতি আর ভালোলাগা শুধু আমি চলব সামনে, তোমার খুব কা...

ছুঁচোর কীর্ত্তন - অরবিন্দ সরকার

Image
২৬/০৬/২০২১                 ছুঁচোর কীর্ত্তন                   (রম্যরচনা)            -- অরবিন্দ সরকার            বহরমপুর,মুর্শিদাবাদ অশোভনের রত্নালঙ্কার আর ভালো লাগে না।সোনা দানায় রুচির পরিবর্তন। অঢেল বিষয় সম্পত্তি কাকে করবে দান এই নিয়েই লড়াইয়ে তার মতামত নিষ্প্রাণ। দ্বিতীয়ার চাঁদ শুভ! তাই দ্বিতীয়ার সঙ্গে মধুচন্দ্রিমায় সবকিছুই স্থাবর অস্থাবর সম্পদের বিনিয়োগ।নাকে সুড়সুড়ি দিলে হাঁচি পড়ে।বগলে সুড়সুড়ি কাতুকুতু  লাগে। প্রেমের সুড়সুড়ি পরকিয়া জাগে। ঘরের  গচ্ছিত রত্ন সে তো কালো।কালোকে সাদায় রূপান্তরের নাম পরকিয়া। হিসাব বহির্ভূত বেহিসাবি লজ্জাশীলা মূলধন কালোরত্ন। বুড়ো কালে ভীমরতি! খোলামেলা মধুকরের মধুচক্র,অলির আনাগোনা দুকানকাটা নগরপথে কীর্ত্তন। আতরের গন্ধে ইতর ছুঁচোর গন্ধ কি ঢাকা যাবে। মল্লিকপাড়ার শ্রীকাঞ্চন চেহারায় ছুঁচোর মতন। বায়োস্কোপের নামডাকে কামিয়ে পয়সা, নামীদামী নেতা এখন। অতএব অরুচি বিবাহবন্ধন।ও সব সেকেলে নাপিত পুর...

অস্পৃশ্য অশরীরী ছায়া - দিলীপ কুমার দাস

Image
অস্পৃশ্য অশরীরী ছায়া  দিলীপ কুমার দাস আজ ফুরিয়ে গেছে ভালোবাসা মায়া-মমতাও বাকি কিছু নেই,,,  অপরিচিত হয়ে যায় মানুষ  স্বার্থ হাসিল করে ফেললেই।  শরীরের মাঝে নেই তুমুল শিহরণ  মনে পড়ে না, আর আমার কথা,  অপ্রয়োজনীয় অমোঘ মানুষ আমি  অবশিষ্ট নেই কোনো ব্যথা।  এখন আমার নেই সেই প্রশংসা ঘৃণাও আর অবশিষ্ট নেই,  মরা আকাশে নেই মেঘের আনাগোনা  বৃষ্টি ফোঁটার ও হারিয়ে গেছে খেই। মৃত আজ অনুভূতির দেহের  স্পর্শ হয়না হৃদয়ের খাতা প্রেম তো অস্পৃশ্য অশরীরী ছায়া  ঝরে পড়া শুকনো পাতা।  রাগ, মান অভিমান, অনুভব  সবাই যেন এখন অভিনেতা,  বসন্তের ফাগুন নিভানো আগুন  লেখা হয়না কোনো কবিতা। তারিখ - ২৬/০৬/২১

হিসাব কষি - সন্তু প্রামাণিক

Image
হিসাব কষি সন্তু প্রামাণিক সন্তরনহীন আমার স্বত্তবিলোপ ফেরিঘাট- তবু পারাপার চলে উজান স্রোতের টানে। বৈঠা হাতে আমি রুগ্ন মাঝি, ঢেউ গুনে ফিরি আজ শূন্যমনে। ব্যাকুল প্রিয়া মাঘের শীতে, কিইবা আসে কিইবা যায় তাতে- পেট চালাতে বিরাম যে নেই রুগ্ন তবু বৈঠা হাতে। আকাশ, বাতাস ষড় করে আজ, মিলন ক্ষণে কিসের সাজা? কল্পনার এই প্রেক্ষাপটে, যে বিদুষক সেই যে রাজা। নদীর পথেই, হিসাব করি যৌবনের আজ দামটি কত? নৌকা ফুটো, বৈঠা ভাঙা- ঘর্মসিক্ত শরীর যত।            ২৬/০৬/২১

রুমালটা কাঁদছিল - দেবারতি গুহ সামন্ত

Image
রুমালটা কাঁদছিল দেবারতি গুহ সামন্ত ফুল তোলা নক্সীকাটা হাল্কা গোলাপি রুমালটা, অযত্নে,অবহেলায় পড়েছিল দরজার এককোনে। এখানেই শেষ বারের মত দেখা গেছিল নীতাকে, যখন সূর্যটা ঢলে পড়ছিল পশ্চিম আকাশে। নীতার সো কলড্ বয়ফ্রেন্ড আকাশ, হাই-ফাই সোসাইটির স্পয়েলড চাইল্ড। কিন্তু নীতার ভালোবাসায় বদলেছিল ধীরে ধীরে, অবশ‍্য সত‍্যিই বদলেছিল কী? নীতা গরীবের ঘরের লড়াকু মেয়ে, পাত্তা দিত না কোন ছেলেকেই। আকাশ ও তাদের মধ‍্যে একজন, ওদের ফার্স্ট মিটিংটা ঝগড়া দিয়ে শুরু। কি করে যেন নীতার প্রেমে পড়ে যায় আকাশ, বারংবার ক্ষমা চায় নীতার কাছে। নীতার পাথর মন গলতে থাকে আইসক্রিমের বরফের মত, মোমের মত গলে যাওয়া নীতা আকাশের প্রেমে দেয় ডুব। তারপর আসে সেই নির্জন সুনসান দুপুর, নীতাকে কৌশলে আউটহাউসে নিয়ে আসে আকাশ। সঙ্গে ছিল ওর বন্ধুরা,মদের নেশার চুড়, নীতাকে অবাক করে আকাশ পৈশাচিক অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। তারপর একে একে শুরু হয় নীতার ওপর নারকীয় অত‍্যাচার, আদিম লালসায় উন্মত্ত পশুর দল ছিড়ে ফেলে নীতাকে। সহজেই বেরিয়ে যায় নীতার প্রাণ, দরজার এককোনে ওর ফুলতোলা রুমালটা কান্নায় ভেঙে পড়ে।

ছেলেবেলা হেলাফেলা -- অরবিন্দ সরকার

Image
   ছেলেবেলা হেলাফেলা       -- অরবিন্দ সরকার      বহরমপুর,মুর্শিদাবাদ।    কানামাছি ভোঁ ভোঁ কাটে   শৈশবের বেলা, লুকোচুরি,ছৌ কিৎকিত, ইচিংবিচিং, কুৎকুৎ হা-ডু -ডু, ডাংগুলি, লাট্টু  এক্কা দোক্কা, ভূত, ঘুড়ির দড়ি ভোকাট্টা   গোল্লাছুট দোলা। দাড়িয়াবান্ধা, বউচি   কড়ি, পুতুলখেলা, লোহার বেড়ি,টায়ার   বাঘবন্দী, ছুত, ষোলো গুটি, হাঁড়ি ভাঙা   পিছমোড়াদূত, ওপেনটি বায়োস্কোপ  কুলকুলি মেলা। সব খেলা হারিয়েছে     শিশুবেলা চুরি, মোবাইলে খেলাধুলা    দৌড়ঝাঁপ বন্ধ, গাছে উঠে ফলচুরি     পুকুরে সাঁতার, দুধের শিশু এখন    তিনে হাতে খড়ি, ষষ্ঠ বর্ষে স্কুল গণ্ডি   ছন্দ ছেড়ে অন্ধ, বাগ্দেবীর বরপুত্র      সবাই ডাক্তার। ২৬.৬.২০২১

বিদ্য জনের বুদ্ধি - সমরেশ হালদার

Image
বিদ্য জনের বুদ্ধি               সমরেশ হালদার                        সাহিত্য বানান খোলামকুচি কেনেন হাটে বাজারে নিত্য কেনেন নিত্য আনেন সভ্য জনের মাঝারে,  কবিকে কবিরত্ন বলে শুধু তর্ক জোড়েন তিনি লোকের মাঝে দেখান কেবল ইজ্জত বিকিকিনি,  কটুক্তি করে সুখ পান তিনি সুখ পান তাঁর আননে প্রতি লাইনে ভুল খোঁজেন শুধু ভুল খুঁজে পান বানানে,  একটু ভুলে কথা কাটাকাটি ঝগড়াঝাটি করেন না সকল কথায় আস্ফালন শুধু নিজ ভুলটি দেখেন না,  তিনি বিদ্যজন বোঝান কেবল চাল দেন অন্য হাড়িতে বউটি যখন হাঁকান গলা তিনি চুপচাপ বাড়িতে।। ২৪/৬/২০২১

গাঁটছড়া - দেবারতি গুহ সামন্ত

Image
গাঁটছড়া দেবারতি গুহ সামন্ত আলমারির তাকে তোলা, ফুলশয‍্যার বেগুনী বেনারসি টা, মুচকি হাসি দিচ্ছে আমায় দেখে, ব‍্যঙ্গ করছে যেন আমার উপস্থিতিতে। মাত্র এক মাস হল আমার বিয়ের, তারপর থেকে প্রতি মুহুর্তে টের পেয়েছি, ফুলে মধু নয়,আছে বিষাক্ত গরল, যা আমি পান করে চলেছি আজ ও। স্বামী অন‍্য নারীতে আসক্ত, সঙ্গে আছে মদের নেশা, তবু প্রতি রাতে আমাকে দংশন করে, নিঃশেষ করে দেয় প্রতিটা ছোবলে। ঘর ভর্তি জা,ভাসুর,ননদ,দেওর, মাথার ওপর আছেন শ্বশুর,শাশুড়ি, অন‍্যায়ের প্রতিবাদ করেন না কেউ, আড়ালে আবডালে আমি শুধুই হাস‍্যকর বস্তু। গরীব পিতা মাতা আমার, দিতে পারেনি পন,মেটেনি শ্বশুরবাড়ির চাহিদা, তাইতো এই রঙ্গতামাশার আজ ঘটাব অবসান, বেগুনি বেনারসিতে গাঁটছড়া বাধব, ওপরের সিলিং ফ‍্যান আর আমার প্রাণপাখির।

আমরা ভবিষ্যৎ হতে পারলাম না - অভিজিৎ সাহা

Image
আমরা ভবিষ্যৎ হতে পারলাম না           অভিজিৎ সাহা          সেই কবেই পূর্ণিমার উজলা চাঁদ হয়ে সোহেলি সেজে আমার মস্তিষ্ক থেকে রক্তক্ষরণ বইয়ে দিয়েছিলে তা এখনো ডায়েরীর লাইনটানা পাতায় লেপটে আছে।  তুমি তখন বড় অদ্ভুদ ছিলে জানোতো_ আমার সেগুলো এখনো মনে পড়ে- ছুতো কথায় হাসতে, তারপর আমি চরম বকলে মিশমিসিয়ে কান্না দিতে। রাগে তোমার সমস্ত শরীর যখন লালবর্ণ নিত আমি তখন তোমার ঠোঁটের কোণে আলতো করে চুমু দিতাম তখন তুমি আবার ভাব জোগাতে। জানলে সেদিনের সেই তুমি মেখে আজও আমি দিন টানি .........  তোমার সকল পছন্দের জিনিসগুলিকে শিরদাঁড়াতে লাগিয়ে যত্ন করে আমি মুখস্থ করতাম। উদাসীনতার অভিমানকে আমি বড়ই তৃপ্তি নিয়ে সাজাতাম। তুমি খুব মিশুকের সাথে যেসব আদর গুলি করে দিতে সেগুলি আমার হৃদয়ের পাঁজরগুলিকে ভেঙে চূর্ণ করতো কেবল আর সেখান থেকে অনেক লোভনীয় ভালোবাসা কুড়িয়ে কুড়িয়ে সিন্ধুকে জমা করতাম। আমি ত ওমন ভালোবাসায় বড় লোভী ছিলাম সেকথা তুমি মানতে, .... আজও জানলে সেই সমুদ্রের অচিন পাখিকে আসতে দেখেছি একাকী, নিরালায়_ যেখানে আমি তুমি এক হয়ে মিশতাম। এটা মনে পড়ে তোমায়, ঘন বন...

চিত্র - গণেশ, চিত্রকর - সঞ্জন দাম

Image
চিত্র - গণেশ চিত্রকর - সঞ্জন দাম

নেমপ্লেট - সুচরিতা চক্রবর্তী

Image
নেমপ্লেট সুচরিতা চক্রবর্তী  শহরের ঠিক মাঝখানে  আমার বাড়ির নেমপ্লেট "শান্তির নীর"  তেমন প্রভাব ফেলেনি ঘরে বা বাইরে।  ঘড়ির কাঁটা থেকে বাইকের হর্ন সবাই উচ্চ স্বর আমি আকাট মূর্খ ;  চীত্‌কার করে ভাত চাই রুটি চাই সঞ্চয় ও চাই। সময়ের গতি থামিয়ে দেবার জন্য মানসিক বিপর্যস্ত আমি  বুঝি না শব্দের সার্থকতা । দরজার নেমপ্লেট শহরকে  বদলাতে পারে না কখনও  যেমন ভাত রুটির শব্দে  ক্ষিদে মেটে না ঘুম মেটে না। আমার শান্তির নীরে আমি চিতকারে করে বলি আমার ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে।

হঠাৎ দেখা - লক্ষ্মী বিশ্বাস

Image
হঠাৎ দেখা লক্ষ্মী বিশ্বাস ট্রেনটা স্টেশনে এসে দাঁড়াতেই অনির্বান ,কাল শাড়ি পড়ে জানালার ধারে বসে থাকা মেয়েটিকে বার বার দেখছিল।যতো দেখছিল ততো মনে পরছিল তার অতীতের কিছু স্মৃতি । কালো রং ছিল মেঘার খুব প্রিয়।ও যতবার আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল, প্রতিবারই কালো শাড়ি পরেছিল।সেই ঘন কালো চল,ঠোঁটের কোণে লুকোনো হাসি আর বারো বছর পর হঠাৎ মনে পড়ছে।অনির্বানের সাথে মেঘার পরিচয় হয়েছিল কলেজে।প্রথমে বন্ধুত্ব,তারপর ভালোবাসা। কলেজ শেষে কাজের সূত্রে অনির্বানকে বাইরে যেতে হয়েছিল।তারপর তাঁদের সম্পর্কটা ধীরে ধীরে মলিন হতে থাকে।শত চেষ্টা করেও সম্পর্ক টা টিকিয়ে রাখতে পারেনি।                      হঠাৎই ট্রেনে সিগনাল দিয়ে বসে।অনির্বান তাড়াহুড়ো করে ট্রেনে উঠে। সেই মেয়েটির উল্টো পাশের সিটে বসে।মেয়েটির দিকে অনির্বান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে কিন্তু মেয়েটির চোখ ছিল ,বাইরে খোলা জানালার দিকে।এবার সব লজ্জা ,ভয় দূরে রেখে অনির্বান বলে উঠলো- অনির্বান: নমস্কার, আপনার নাম টা কি? মেয়েটি: আমি,অনেক ক্ষণ থেকে দেখছি,আপনি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। অনির্বান: আপনাকে দেখে আমার একজন পুর...

ভালোবাসার সমুদ্রে মিশে - সন্তু প্রামাণিক

Image
ভালোবাসার সমুদ্রে মিশে       সন্তু প্রামাণিক একরাতে ঝড় হবো যতো ক্লান্তিময় দুঃস্বপ্ন ভরা স্মৃতি সব বের করে দেবো- জীবনের জানালা দিয়ে। তারপর শান্ত সমুদ্র হবো পুরোটা শরীর জুড়ে থাকবে শুধু প্রেমের নীল রং। আকাশের প্রতিবিম্ব আঁকবো- চাঁদ-তারা সাথে নিয়ে। তারপর তীরে এসে সমর্পিত হবো- তোমার তপ্ত বালুরাশির কোলে। তারপর শরতের আকাশে মেঘ হবো ছুঁয়ে যাবো তোমার নরম গাল। তুমি কাশফুল হয়ে দুলে যাবে- সে এক দৈব মিলন। তারপর বেনামী চিঠি হবো প্রতিটি শব্দে ভালোবাসার আস্ফালন। তুমি আকুল হবে, খুঁজবে আমায়, আমি দুর থেকে - তোমার প্রেমিক হবো, আর ডাকপিয়ন হবে তার সাক্ষী। তুমি খরস্রোতা , দুর্গম গিরি পথ ধরে- আসবে নেমে। একাকি কঠিন পথ। তারপর শান্ত হবে- আমার ভালোবাসার সমুদ্রে‌ মিশে। ২৫/০৬/২১                   

এক ঘর ছড়া - অমরেশ বিশ্বাস

Image
এক ঘড়া ছড়া  অমরেশ বিশ্বাস  এক ঘড়া ছড়া চাই ঘরে বসে পড়ব ছড়া পড়ে আশমানে মই ছাড়া চড়ব। সেই ছড়াদের বুকে কত আলো জ্বলবে ভয় নেই ভয় নেই এইকথা বলবে। ছড়া দাও এক ঘড়া সকলকে পড়তে পড়লে সে ছড়া কেউ চাইবে না লড়তে। ঘড়া ভরা ছড়া পড়ে হাত তুলে নাচব দুঃখকে ছুঁড়ে ফেলে আনন্দে বাঁচব। সেইসব ছড়া পড়ে হা হা করে হাসব থাকব না দূরে কেউ কাছাকাছি আসব। ছড়া পড়ে ভালবাসা মনে জেগে উঠবে  পাখি সব গাবে গান যত ফুল ফুটবে। ছড়াতেই ঘুচে যাবে রেষারেষি দ্বন্দ্ব  খুঁজে পাবে সকলেই জীবনের ছন্দ। ঘড়া ভরা সেই ছড়া কোনখানে গেলে পাই জানা নেই কে কি চায় আমি সেই ছড়া চাই।

লেখা পড়া - অরবিন্দ সরকার

Image
              লেখা পড়া            অরবিন্দ সরকার           বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ। লেখাপড়া হও ছড়া    মুখস্থ সুবিধা, অন্ধজনে আলো পায়  তাল,লয়,ছন্দে, মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ   মা তোমায় বন্দে, পড়ার সঙ্গে লেখায়  নেয় কোনো দ্বিধা। নানা মুনি নানা মত   জঠরের ক্ষুধা, চলিত সাধু নিয়মে  পড়াশোনা ধন্দে, পাঠ্যসূচি বদলায়  বই বোঝা স্কন্ধে, কমিশন মতামতে  পাশ- ফেল সিধা। মহামতি মহাজন    চেয়ারে আসীন, শিক্ষার বারোটা বাজে   মনগড়া খেলা, নন্  গভর্মেন্ট  স্কুল      চলে রমরমা, নেতামন্ত্রী ষড়যন্ত্রী    লেখাপড়া ক্ষীণ, রাজনীতি পেশা হ'লে  টিপছাপে চলা, খাওয়া পড়া স্কুলে   শিক্ষায় শ্রীনামা। ২৫/০৬/২০২১

উতল হাওয়া - সমরেশ হালদার

Image
উতল হাওয়া                সমরেশ হালদার                       মাঝে মাঝে স্বপ্ন রা সব কান্না করে শুনতে পাই তাঁর গভীর ভাবে ভেঙে যাওয়া কাছে এসে কুল হারানো শব্দগুলো  ভীষণ পোড়ায় বেদনা দেয় উতল হাওয়া । ২৮,০৫,২১

আভিজাত্য - অরবিন্দ সরকার

Image
            আভিজাত্য        অরবিন্দ সরকার      খাগড়া শহরের বাসিন্দা রূপালী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার শ্রাবণী দুজনেই হরিহর আত্মা। দুজনেরই স্বামী কালেক্টরীতে চাকুরী করেন। সারাদিন ফোনে ওদের কথাবার্তা। রান্না খাওয়া গৃহকর্মের কাজ করলেও ফোন কানে গোঁজা। রূপালীর বর চারচাকা কিনেছেন আর একটি রূপালীর আব্দারে কুকুর,থুড়ি সারমেয় কিনেছেন। এ্যালসেসিয়ান ডগ্ না থাকলে অভিজাত হওয়া যায় না।বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এই বিলেতী কুকুর নিয়ে তার আদিক্ষেতা। হ্যালো শুনছিস্ তো ------ শ্রাবণী - হ্যাঁ বল্ বল্ আমিও একটা কিনবো রে ! সময় কাটছে না আমার। তাছাড়া শ্বশুর শাশুড়ি তো আমাদেরও বৃদ্ধাশ্রমে।উনারা সব সেকেলে লোক! উনাদের নিয়ে বাইরে বেরোনো দায়। ওদের অনুষ্ঠান বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পরিচয় দেওয়া লজ্জার। তাছাড়া কুকুর নিয়ে গেলে আভিজাত্য বাড়বে। তুই কুকুর কোথা থেকে আনলি? আর কি কি ওর জন্য করিস্? রূপালী -- আরে অনেক খরচা! দাম নিয়েছে পঞ্চাশ হাজার।ওদের পোষাক পরিচ্ছদ ,দামী সাবান ,আর চিকিৎসা করাতে হয়। প্রতিমাসে শরীর ঠিক রাখতে ও প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন দিতে যা...

নির্বাসন - পৌষালী সেনগুপ্ত

Image
নির্বাসন পৌষালী সেনগুপ্ত আমি থাকতে চাইনি, নিজের আশা,আকাঙ্খা,স্বপ্ন,মোহকে ত্যাগ করে থাকতে, নিজের জীবনটাকে শৃঙ্খলে বেঁধে ফেলতে! জীবনটাকে আমি ভালোবাসি! জীবনের ভালোটা খারাপটা নিয়ে আমি ভালোবাসতে চাই! স্বপ্ন নিয়ে চোখে আমি বাঁচতে চাই! মনখারাপের জগৎ নিয়ে আমি বাঁচতে চাই! তোমার মিথ্যে অঙ্গীকার নিয়ে  আমি বাঁচতে চাই! তোমার ভাঙ্গা প্রতিশ্রুতিতে নিয়ে আমি বাঁচতে চাই, তোমাকে ভালোবাসি তাই আমি বাঁচতে চাই!

বর্ষা - সন্তু প্রামাণিক

Image
বর্ষা সন্তু প্রামাণিক গ্রীষ্মের দহন জ্বালায় যখন ধরিত্রী কুপোকাত- তখন তোমার আগমন। তুমি শুধু এই ধরিত্রী শান্ত করোনা, শান্ত করো অনেক শিশুমন, শান্ত করো পরিশ্রান্ত প্রেমিকের অতৃপ্ত বাসনা। কল্পনা হয়ে ওঠো কবির প্রেমময়তার কবিতায়। করো নতুন প্রাণের সঞ্চার। কখনও ভীষণ বেগে- কখনও ইলশেগুঁড়ি হয়ে, কখনও ঘনকালো হয়ে, কখনও কলকি হেসে রোদের সাথে খেলে যাও এক সুখময়তার খেলা। বর্ষা, এক নতুন জীবনের ডাক কিশলয়ের সাথে সাথে, অথবা নতুন জলজ প্রাণের সাথে।                       

উপহার গুচ্ছ - অনুপ কুমার

Image
উপহার গুচ্ছ অনুপ কুমার  মন্দ ভঙ্গিমায় করিয়াছি ক্ষুদ্ধ, সম্মুখ সমরে হইয়াছি নিন্দ। সুদক্ষ তোমার প্রতিবাদ ভাষ্য, স্নেহ আড়ালে,বুঝিনাই রহস্য। প্রত্যহ বৃত্তরূপ উপেক্ষা গুচ্ছে ভুলিয়াছি যে,নিজ আত্মসম্মান। অবশিষ্ট অস্তিত্ব যাইবে নগ্নে, পরন্তু আত্মবাক্য,সুশীল প্রান। দেখিলিনা রে কেহ,অন্তরে দ্বন্দ্ব, প্রহরান্তে উচ্ছিষ্ট,বেতাল ছন্দ। অধু নহে,জীর্ণ অষ্টাদশি বর্ষ, সমাপ্ত হইবে,পাইলে সংস্পর্শ।

ব্যাঙের বিয়ে - অমরেশ বিশ্বাস

Image
ব্যাঙের বিয়ে অমরেশ বিশ্বাস  কলাপাতা মাথায় হুলো  যাচ্ছে শ্বশুর বাড়ি  টাপুরটুপুর বৃষ্টি দেখে হাঁটছে তাড়াতাড়ি। এক কোলা ব্যাঙ দেখে বলে আমিও চাই যেতে তোমার শ্বশুর বাড়ি যাব মণ্ডামিঠাই খেতে। হুলো চলে এঁকে বেঁকে ব্যাঙ চলে লাফ দিয়ে হুলো বলে চল কোলা ব্যাঙ  করবি যদি বিয়ে। ভাববি দেখে আমার শালী  ঠিক যেন এক পরী তোর ভাগ্যে থাকলে পাবি তার মত সুন্দরী। বর হল ব্যাঙ হুলোর শালীর  সবাই বেজায় খুশি  বিয়ের আসর মাতায় নেচে মাসতুতো বোন পুষী।

হৃদয়ের মাঝে তুমি - বুদ্ধেশ্বর পৈলান

Image
হৃদয়ের মাঝে তুমি বুদ্ধেশ্বর পৈলান আমার হৃদয়ের মাঝে,  শুধুই তোমার বসবাস,  কিছুই চাইনা তোমার কাছে,  তুমি আমার নিঃশ্বাস- প্রশ্বাস।    আমার হৃদয়ের মাঝে,  তুমি রয়েছো দেবীর আসনে,  তোমার দেওয়া ভালোবাসা আছে,     আমার হৃদয়ের বাঁধনে।     আমার হৃদয়ের মাঝে,  তোমায় রাখবো সারাজীবন,  তোমায় দেখতে চাই কনের সাজে,  তোমায় না পেলে আমার মরন।     আমার হৃদয়ের মাঝে,  শুধুই তোমার স্বপ্নের জাল বোনা,  তোমার প্রেমের গান হৃদয়ে বাজে,  উড়ে যেতে চায় মানে নাকো কারোর বাধা।

বাঁচাও বাঁচাও - অমরেশ বিশ্বাস

Image
বাঁচাও বাঁচাও  অমরেশ বিশ্বাস  পেট্রোল ডিজেল লাফাচ্ছে রোজ নেই থামবার নাম সকাল বেলায় দেখছি রোজই  বাড়ছে তাদের দাম। পাল্লা দিয়ে পণ্যদ্রব্যের  মূল্য বেড়ে যায় মানুষ ভাবে তাদের কেন  যাচ্ছে কমে আয়? কোন কিছুই সস্তা দামে যায় না এখন পাওয়া  কেউ প্রতিবাদ আর করে না  জানে বৃথাই চাওয়া। কাজ করে চায় মানুষ খেতে কোথায় দেশে কাজ হারাচ্ছে কাজ কত মানুষ  পড়ছে মাথায় বাজ। এই সময়ে ধরবে কে হাল কে বাঁচাবে এসে এই অসহায় মানুষগুলো যাবেই তবে ভেসে? কাদের জন্য মানুষগুলোর  আজকে চোখে জল চাইনে জানতে কি রং তাদের কি বা তাদের দল। ওদের কর্ম, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের নিতেই হবে ভার প্রাপ্য ওদের স্বাধীন ভাবে বাঁচার অধিকার।

মন তুই স্বার্থপর - দিলীপ কুমার দাস

Image
মন তুই স্বার্থপর দিলীপ কুমার দাস  মন কী জানে, মনের কথা?  কি যে ভাবছে এই মন মন বোঝে না মনের কথা  আনমনা হয়ে থাকে এখন।  এখন আর মন পড়ে না  কাগজের পাতার খবর  মনের কথা মনের মাঝে  হয়ে যায় গড়বড়।  হাজারো রকম চিন্তার মাঝে  যায় গো মন ভুলে  নিজের মনের কথা গুলো  রাখলাম আজ তুলে।  অবচেতনের ভেতর ডুবে মন  পায় না খোঁজে? কূল  চেতন হলেই মন দেখে  সবাই বোঝে ভুল।  অনুশোচনার কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে মন সেই মনই অলংকৃত করেছে বিচারকের আসন। এই পৃথিবীতে মানুষ গুলো  কেনো এমন স্বার্থপর তবুও,  মন বুঝতে পারে না  কে-বা আপন কে-বা পর  লোভের বশের ফাঁদে পা দিয়ে  হইসে নে রে মন তুই স্বার্থপর সত্যের পথে বাঁধা বেশি  বিবেক বাতির আলোয় মনের ঘর। তারিখ - ২২/০৬/২১

অক্ষর সোপানে" বিধান" - অরবিন্দ সরকার

Image
                                    অক্ষর সোপানে" বিধান"       অরবিন্দ সরকার                     এ                  লেখা                 রক্তের               অনুলিপি             বিধাতা নয়          তোমার আমার       বল্মীকের    সুঢিপি   মরা মরা         ব'লে ব'লে আজ     রামনাম      ফুটেছে   তুমি       যাচ্ছ তাও     ভুলে    ভালো      হ'তে    চাইলে      সবই               বিফলে         পথ     না     মেল...

কালের বদল - পৌষালী সেনগুপ্ত

Image
কালের বদল পৌষালী সেনগুপ্ত সেকালে ছিলো সবুজ প্রকৃতি ফুলে ফলে ভরা একালে ইঁটের প্রাসাদ শুধু বিনাশের পথে ধরা। একালে শুধু বিরাট ফ্ল্যাট, মোবাইল টাওয়ারের চাওয়া! ইট,কাঠ ,বালি, সিমেন্টের ঘরে আজ কমে গেছে চাওয়া পাওয়া! আজ নিশ্বাস নিতে লাগে দম, খুলেছে অক্সিজেন বার! সবুজায়নের নামে আজ লোকে লাগাচ্ছে গাছ তাও কবার? ভুলে ছিলো যে আগে ছিল যা সম!

একদিন অসুখ সেরে যাবে - মনীষা ঘোষ

Image
একদিন অসুখ সেরে যাবে মনীষা ঘোষ বাতাসে আজ শোনা যায় মৃত্যুর মিছিলের  হুংকার , পচা গলা মৃত্যুর গন্ধে এই পৃথিবী ভরা । মৃত্যুর মিছিলে মৃতদেহের ঠাঁই নেই শ্মশানে তেও, পৃথিবীর আজ বড়ই অসুখ তাও। কেউ বাদ নেই বুড়ো থেকে শিশু, সবাই আজ মৃত্যুর মিছিলে বলির পশু । আমাদের এই স্বাধীন দেশে, মানুষের একি নির্মম পরাজয়। তবু আমরা মানুষ তাই আজও স্বপ্ন দেখি, এই পৃথিবীর অসুখ একদিন সেরে যাবে  সেই কল্পনা করা সুখে। আমরা আজও জেগে আছি, এখনও হারিয়ে যায়নি পৃথিবীর বুক চিরে। পৃথিবীর এই অসুখ , একদিন সেরে যাবে, পৃথিবীর মধ্যে থেকে অনেক কিছুই হয়তো হারিয়ে যাবে। হয়তো হারিয়ে যাবে নৌকার মাঝি, কিংবা মেঠো পথের সেই গন্ধ। অনেক মানুষই হয়ে যাবে, হয়তো অচেনা, তার মধ্যেই হয়তো রয়ে যাবে, "তোমারই প্রিয়জন"। জানি , পৃথিবীর এই অসুখ একদিন সেরে যাবে , সেই দিন তুমি আর তুমি নও,  তুমিও হয়তো হারিয়ে ফেলবে।  তোমার তুমি কে , হয়তো তোমার তুমি কেই প্রশ্ন করবে, তুমি কে ? 22/06/2021

ভুল - দিলীপ কুমার দাস

Image
ভুল    দিলীপ কুমার দাস  ভুলে ভরা জীবন আমার         ভুল পথে চলা              ভুলের মাঝে হারিয়ে যা-ই                     ভুল কথা বলা। ভুল সমীরণে গা ভাসিয়ে        উড়ে বেড়ায় আকাশে              ভুল ভাঙে সোপান টুটে                   পাখা ভেঙে বাস্তবতার দেশে।  ভুল উর্ণনাভের জালের মত       বাসা বাঁধে গাছের মগডালে                ভুল বেসাতি দাম হাঁকান                       বিরাগী হাটের ছলে।  ভুল প্রেমের বাঁশি বাজায়        নীপবৃক্ষ ভেবে মন              ভুল নির্নিমেষ চোখ দুটো                    চেয়ে থাকি রাধিকার সন। ভুল মানুষ ভুলো মন    ...

কল্পনার আড়ালে ভবিষ্যৎ - অভিজিৎ সাহা

Image
কল্পনার আড়ালে ভবিষ্যৎ           অভিজিৎ সাহা                                                 একটি গ্রামে এক রাজা ছিলেন। রাজার শাসনব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত যুক্তি ও সংবেদনের আর প্রতিবাদীরও। রাজা যেমন গ্রামের মানুষদেরকে ভালোবাসতেন ঠিক তেমনই গ্রামের মানুষগুলি রাজাকে দেবতাজ্ঞানে শ্রদ্ধ্যা করতেন। রাজার সততা, মানবিকতা, নৈতিকতা ও সত্যতা গ্রামের ছোট থেকে বড় সবাইকে বৃদ্ধ করেছিল। কিন্তু হ্যাঁ রাজা কখনো অন্যায়কে মেনে নিতে পারেননি। অন্যায়কারীদের কঠোরতম শাস্তি তিনি যথাভাবে প্রদান করতেন।  বেশ চলছিল রাজার স্থায়িত্ব শাসন ও ব্যবস্থা। একদিন রাজার দুই মন্ত্রীরা মিলে রাতের অন্ধকারে গ্রামের গরীব চাষীদের ওপর হামলা করে, তাঁদের সম্পদ চুরি করে আত্মসাৎ করেন। পরেরদিন রাজার কাছে চাষীদের করুন মিনতি আসে যে রাজাবাবু আমাদের জমানো সব সম্পদ লুঠ হয়েছে গতরাতে আমরা খাবো কি রাজামশাই, কিছু উপায় বলে দিন, আমরা যে অসহায় দিনমজুর। দিন আসলেই আমরা খেতে পাই। তখন রাজাই বলেন যারা যারা এই...

কল্পনার দাঁড় বেয়ে - সন্তু প্রামাণিক

Image
কল্পনার দাঁড় বেয়ে      সন্তু প্রামাণিক  আবার যাবি একদিন? ওই গঙ্গার ধারে - হাওড়া ব্রীজের নীচে।  পড়ন্ত বিকেলে যখন সূর্য চুমু খায় - পৃথিবীকে বড়ো আদরে।  আমিও তোর পাশে বসে - হালকা গল্পের কাপে চুমুক দিতে দিতে - হারিয়ে যাবো ভালোবাসার পথে।  অথবা ইছামতির জলে,  আমি বাইবো দাঁড় আর তুই - গাইবি আনমনে, শ্রুতির পথ ধরে।  আমি মাঝি হয়ে খেয়া টেনে,  তোকে নিয়ে ভাসবো অজানার মহাসমুদ্রে।  আমি চাই তুই শরতের মেঘ হয়ে,  হালকা পেজা তুলোর মতো,  ভেসে যাবি আমার উপর দিয়ে - আমি কাশফুলের বন হবো,  তোকে ভাসতে দেখার খাতিরে।  যখন খুব ঝড় হবে,  প্রকৃতি ভীষন রুষ্ট, আমি বুকে নিয়ে - তোকে আগলে রেখে সামাল দেবো।  তুই আসবি সেদিন? যেদিন আমি সব ছেড়ে - পাড়ি দেবো অনন্ত বৈকুন্ঠের পথে।  আমি সবই ভাবি, তোর দিশাতেই,  কল্পনার দাঁড় বেয়ে।                      

তারতম্য - অরবিন্দ সরকার

Image
তারতম্য        অরবিন্দ সরকার          তফাত্ বুঝি পার্থক্য   তফাত্ ফারাক, দূর হটো ,কেটে পড়ো  তফাত্ যাওয়া, স্ত্রী তারতম্য বিচ্ছেদ   পরস্ত্রী ধাওয়া, কটুক্তি গালিগালাজ   তারতম্যে ফাঁক। শালা কয় স্ত্রীর ভাই    পাঠশালা রাখ্ কামার কুমোর শালা  নয়নে চাওয়া, খাল কেটে পুষ্করিনী   এ গাত্র সওয়া, করে খাও খেটে খাও  নাই রাখঢাক। আবির্ভাব-আসা জন্ম  উদয় হাজির, একচোখ কানা কয়  দুই চোখ অন্ধ, পার্থক্যে ভদ্র ইতর   রাজা প্রজা রয়, চুলকাটে প্রামানিক  কানকাটে বীর, খাওয়া খাইয়ি ক'রে   দ্বার সব বন্ধ, খাওয়া দাওয়া শক্তি  মৃদু মন্দ বয়।

প্রণাম পিতৃদেব - অরিন্দম দাস

Image
প্রণাম পিতৃদেব অরিন্দম দাস মাতৃ জঠর হতে জন্ম, মাতৃক্রোড়ে লালন। সস্নেহে, সাদরে, সযন্তে, পিতৃদেব করে পালন। দিনরাত্রি পরিশ্রম করে, করছে অর্থ উপার্জন। মেহনতী-পরিশ্রমী করেছে, পরিবারের ভরণ পোষণ। পারিবারিক কি আবদার? করবে সবার স্বপ্ন পূরণ। সন্তানের মাথায় আশীর্বাদ, হবে তাদের সাফল্য অর্জন। কালক্রমে হয়েছে বয়ঃবৃদ্ধি, অবসরে কেন ক্ষুন্ন মর্যাদা? সন্তানদের সংসার পালনে, বৃদ্ধাশ্রম আজ আশ্রয় দাতা! প্রিয়জনের বিরাগে দুশ্চিন্তা, অবহেলে স্বাস্থ্যের অবনতি। সম্পত্তির বিভাজন ষড়যন্ত্রে, পিতৃদেবের অন্তিম পরিণতি! পিতার স্মরণে পিতৃদিবসে, সন্তানের বৃদ্ধাশ্রম অভিযান। কেলানো বদনে সেল্ফি তুলে, ফেসবুকে পিতা-পুত্রের দর্শন। পরিবার-পরিজন পরিত্যাজ্য, পিতৃদেব আশ্রিত পরলোকে। অশ্রু বিসর্জনে বিদায়ী প্রণাম, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান পালন পিতৃশোকে। কালচক্রে ভাগ্যের বিড়ম্বনা, সন্তানের ভোগান্তি কর্মফল। সব কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্তে, ক্ষমাপার্থী-- নয়ন ভরা জল।

রবিঠাকুর - সমরেশ হালদার

Image
রবিঠাকুর           সমরেশ হালদার                    ঝিমঝিমিয়ে একলা দুপুর    ভাল্লাগে না খুকুর  হঠাৎ তখন বৃষ্টি হয়ে      আসেন রবি ঠাকুর ।   মায়ের বুকে ছোট্ট শিশুর      অবুঝ কলতান আঁধার ঘরে রবিঠাকুর      ঘুমপাড়ানি গান ... ভাগ্যি তোমার মন্দির নেই   মসজিদ নেই ঠাকুর   ছড়ায় গানে লুকিয়ে হাসো    শিশুর কবিঠাকুর.. ২০,০৬,২১

বিজয়া - শৌভিক রায়

Image
  বিজয়া       শৌভিক রায়  দশমীর সকালেও বেজেছিল ঢাক,  কাসর, উলু, শঙ্খের ধ্বনি সুমধুর।  আলতা মাখা পায় ধ্বনিত হয়েছিলো 'নিক্কন'- নুপুরের নিনাদ মৃদুস্বরে।  সহসা পড়ন্ত সূর্যের আলোয় মৌন স্তব্ধতার সুস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি, যখন বরণের ডালি সেজেছিল নানাবিধ উপাচারে, ঢাকে কাঠি পড়েছিল, তবে এক বিচিত্র বিরহী ছন্দে বেজেছিল।  কী যেন এক চাপা যন্ত্রণায়, শূন্যতায় পরিবেষ্টিত একই অনুভূতি প্রতি বাঙালীর হৃদয়ে, আগামীর আহ্বান শোনা যায় আজ তাইতো বারংবার।  ঢেউ ওঠে উছলি নীরস পাথারের বুকে, আশা শুধু বছর ঘোরার তরে।  তটিনীর বক্ষে বিসর্জিত প্রতিমা।  এর সাক্ষ্য দেবে সময়; নদীর স্রোত- সম বহমান,  তারই প্রতীক্ষায় তো দুনয়ন চেয়ে থাকে অন্তরের দ্বার,  নক্ষত্রখচিত দূর নীলিমার দিকে।।

মধ্যরাত - লক্ষ্মী বিশ্বাস

Image
মধ্যরাত       লক্ষ্মী বিশ্বাস অমাবস্যার রাতের কালো অন্ধকারের মতো কিছুটা অন্ধকার সজলের চোখেও নেমে এসেছিল।শান্তি প্রিয় চেহারাটাই যেন বদলে দিয়েছিল কিছু অপূর্ণ ভাবনা।সকলের সমস্ত চাহিদা মিটিয়ে অবশেষে তার ঘুমোনোর সময়। তবে ঘুম ও আসছে না।সকালে আবার লড়াই।প্রতিদিনের বেঁচে থাকার লড়াই। নিজেকে সুখী প্রমাণিত করার লড়াই। বালিশের নীচ থেকে একটা বিড়ি টানতে লাগলো সে।  বিড়ির ধোঁয়াটা সাত বছর আগের স্মৃতি কে মনে করিয়ে দেয়। সেদিন উপায় ছিল না, রিনিকে বলেছিলাম কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে। সে বলেছিল, "আমার শিরদাড়া নাকি কখনোই সোজা হবে না"। ব্যাস সব শেষ। আজ আমি হাসছি, না জানি এই হাসির আড়ালে এক সময় কতো দুঃখই না লুকিয়ে রেখেছিলাম। না জানি কতো ছেলে মেয়ে আমার মতো বিড়ি, আর নিকোটিনের নেশায় প্রতিনিয়ত মরছে। তবে আমি কি বেঁচে আছি?  বেঁচে আছি কথাটি বলতেই এক বুক দীর্ঘ নিঃশ্বাস পরছিলো মাটিতে। আজ আমার শিরদাঁড়া সোজা হয়েছে। বাবা-মায়ের একমাত্র অবলম্বন হতে পেরেছি। সেই প্রতিদিন একটা শার্ট পরেই তোমার সাথে দেখা করতে যেতে হতো। আজ হাজারটা শার্ট হয়েছে, কিন্তু দেখা করবো কার সাথে, সেই তুমি টাই তো আর আমার নেই! দরজার ...

ভীম ও ডিম - অমরেশ বিশ্বাস

Image
ভীম ও ডিম অমরেশ বিশ্বাস  ডিম ছাড়া ছোটা ভীম আর কিছু খায় না খেতে বসে ডিম চায় আর কিছু চায় না। গদা কাঁধে বলে ভীম প্রোটিনের দরকার  রোজ ডিম খেলে মেটে সব প্রয়োজন তার। তার সাথে পাওয়া যায় খনিজ ও ভিটামিন  তাই পাতে ডিম চাই দুইবেলা প্রতিদিন। ছুটোছুটি হুটোপাটি করতে কে চায় না ছুটলেই পড়ে তারা যারা ডিম খায় না। সকলেই ভাবে কেন দুরন্ত ছোটা ভীম  রহস্য একটাই  নিয়মিত খাই ডিম।

ভাগ্যিস চলে গেছিল - বুদ্ধেশ্বর পৈলান

Image
ভাগ্যিস চলে গেছিলি বুদ্ধেশ্বর পৈলান ভাগ্যিস চলে গেছিলি আমায় ছেড়ে বহুদূরে আমি ফেরার কথা বলিনি কান্নায় ভেসে যাওয়া হৃদয়ের তীরে।  ভাগ্যিস চলে গেছিলি তাইতো নতুন করে চিনেছি নিজেকে নতুন করে বাঁচতে শিখেছি গড়তে শিখেছি নতুন ভালোবাসার সাম্রাজ্যকে।  ভাগ্যিস চলে গেছিলি তাইতো মিথ্যে স্বপ্নের জাল বোনা বন্ধ করে দিয়েছি ধরেছি একাকীত্ব জীবনের হাল।  ভাগ্যিস চলে গেছিলি তাইতো বুঝেছি ভালোবাসার মূল্য ভালোবেসে শুধুই দুঃখ পেয়েছি হারিয়ে ফেলেছি নিজের প্রাবল্য।  ভাগ্যিস চলে গেছিলি নয়তো রাতের পর রাত শুধুই তোর কথা ভাবতে হতো ভাবতে হতো তোর সাথে কাটানো মুহূর্ত।  ভাগ্যিস চলে গেছিলি  তাইতো আজ আমি সমাজে প্রতিষ্টিত হতে পেরেছি তাইতো আজ আমি সবার কাছে দামি।

জীবন তরী - দিলীপ কুমার দাস

Image
  জীবন তরী      দিলীপ কুমার দাস  সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে  জীবন তরী,,,,, সময়ের নদীতে ঢেউ খেলে  ভালো মন্দের লুকোচুরি।  কতো কাজের ব্যর্থতায়  দিত মনে ব্যথা, মানুষের মুখে প্রসংশা হতো  সাফল্যের কথা। ভুল হলে উড়তো বাতাসে  নিন্দার ঝড় ঠিকঠাক হলেই তবেই আশির্বাদ দিত বর। ভালো কাজে লেগে থাকে  সমালোচনার মুখ মন্দ কাজে নেই কোনো  আনন্দ বা সুখ।  হাসি, কান্না, সুখ, দুখ জীবনের একটা অংশ  ভালো কর্মে বেঁচে থাকে যুগ যুগ ধরে তার বংশ। রচনা - ১৯/০৬/২১ ভৈরব, কিশোরগঞ্জ বাংলাদেশ

পথের পারে - সন্তু প্রামাণিক

Image
পথের পারে   সন্তু প্রামাণিক  আমার পথটি বেঁকে গেছে আজ,  ছায়াশীতল বনের কোণে,  উচ্ছল নদীর তীর বেয়ে,  দিগন্তের ওপারের কোনো ঠিকানায়।  কাঁখে কলসী নিয়ে যে পথ ধরে,  তুমি চলতে রাঙা পায়ে, খোলা চুলে।  যে বিকেল গড়িয়ে যেতো - তোমার হাসিমুখে।  সেই বিকেলের পথ ধরে,  আমার পথও এগিযে চলে।  একটা নৌকা একাকী নদীপথে,  যে পথ তোমায় ওপারে নিয়ে চলে,  সেই পথ ধরে - আমার পথও এগিয়ে চলে।  যে পথে একটা দুধের শিশু কেঁদে ওঠে,  মায়ের আদর পাবার আশায়,  আমার পথও সেপথে,  নতুন করে, নতুন ভাবে আমার পথও সেপথে এগিয়ে চলে।    

বৃষ্টির রাগ - রূপালী গোস্বামী

Image
বৃষ্টির রাগ      রূপালী গোস্বামী  রেগে গেলে বৃষ্টিদের  দেখেছ কি চেহারা? আঁকাবাঁকা কালো কালো কি বিচ্ছিরি কি বেয়াড়া।  ঝমঝম বৃষ্টিরা, রাগে যেন ফুঁসছে,  মেঘেরা গুরু গুরু গর্জনে মানুষকেই দুষছে।  এই ঝোরো হাওয়া, এই ঝিরিঝিরি  আবার দেখো মেঘমুক্ত- ওই দেখো অতিবৃষ্টি  বন্যায় যুক্ত।  এই আছে,এই নেই- যেন কোন খেয়ালি আকাশের ময়দানে  খেলে যেন দেওয়ালি। রাগবে না কেন বলো গাছ কাটো তোমরা। ওখানেই বৃষ্টির  থাকে প্রাণ ভ্রোমরা।। 18/6/2021