আলোর দিশা সাহিত্য পত্রিকা - দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সংখ্যা - ইংরাজি নববর্ষ সংখ্যা



আলোর দিশা সাহিত্য পত্রিকা 
 বিশ্ববঙ্গ বাংলা সাহিত্য একাদেমী অনুমোদিত 
Registration number - (BBSA/GM/132/2021) 
আলোর দিশা সাহিত্য পত্রিকার ওয়েব ম্যাগাজিন সংখ্যা 
দ্বিতীয় বর্ষ, প্রথম সংখ্যা : নববর্ষ সংখ্যা 

আলোর দিশা সাহিত্য পত্রিকার 
প্রকাশ তারিখ - ৩১ ডিসেম্বর ২০২১
ডিসেম্বর দ্বিতীয় সংখ্যা 
প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদিকা: সোমা বিশ্বাস 
উপদেষ্টা : সোমনাথ নাগ, তপন কুমার তপু, অরবিন্দ মাজী, অমল ভট্টাচার্য্য, শিবপদ মন্ডল 

প্রচ্ছদ অঙ্কনে : শ্রীমতি মুনমুন ঘোষ

সম্পাদকীয় :
আলোর দিশা সাহিত্য পত্রিকার ওয়েব ম্যাগাজিন সংখ্যা প্রকাশিত হলো। সকল কবি ও সাহিত্যিক ও পাঠক-পাঠিকা বন্ধুকে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
                            - সোমা বিশ্বাস 


লেখা পাঠানোর ঠিকানা - aalordishasahityapotrika@gmail.com 
ওয়েবসাইট - aalordishasahityapotrika.blogspot.com

লেখার দায় লেখকের, সম্পাদকের নহে। 




ইংরাজি নববর্ষ সংখ্যার সূচীপত্র :
১) বর্ষ বিদায় - অরবিন্দ সরকার
২)  সঙ্কল্প - সৌরভ পাত্র 
৩) সোনালী রোদ - শাশ্বতী দেব
৪) মাশুল - সুচেতা অধিকারী
৫) নির্জন দুপুরে - বারিদ বরন গুপ্ত
৬) সময় - মনীষা ঘোষ 
৭) আলোচ্ছ্বাস - আকাশ ভগত
৮) হ্যাপি নিউ ইয়ার - সজল মণ্ডল
৯) বয়স টা যেন কমে না যায় - অমল ভট্টাচার্য্য  
১০) নববর্ষ - অভিজিৎ দত্ত  
১১) ভালোবাসলে - মুনমুন ঘোষ
১২) নব অঙ্গীকার - রবি শঙ্কর মুখোপাধ্যায়
১৩) অবসর - তরুণকুমার মুখোপাধ্যায়
 মেঘ সংক্রান্ত - তরুণকুমার মুখোপাধ্যায়
১৪) হ‍্যাপি হ‍্যাপি নতুন নতুন - দেবারতি গুহ সামন্ত
১৫)  অন্ধের দিনরাত - অরবিন্দ সরকার
১৬) নতুন বছরের প্রার্থনা - শিশির মল্লিক
১৭) লুকোচুরি - সুজয় মজুমদার
১৮) কৈশোরের প্রেম - সুব্রত চক্রবর্ত্তী
১৯) গাঁয়ের পুরোনো শীত-সন্ধ্যা - অঞ্জলি দে নন্দী, মম
২০) ভালো থেকো - শুভঙ্কর মজুমদার 
২১) লুপ্ত আশা - মোঃ মাজহারুল ইসলাম
২২) গোধূলি লগ্নে - মনির চৌধুরী  
২৩) নববর্ষ - তপন কুমার তপু 
২৪) সুস্বাগতম্ শুভ নববর্ষ - অরবিন্দ সরকার
২৫) স্বাগতম নববর্ষ - শিবপদ মন্ডল
২৬) ঝরাপাতা - সুমিত বৈদ্য ( ব্যারাকপুর) 
২৭) নতুন বছর - রামদেব মন্ডল
২৮) বিদায় বর্ষ-২০২১ - - তরুণ নস্কর
২৯) রাগে অনুরাগে প্রেমের পরাগে
অক্ষয় কুমার বৈদ্য
৩০) অদ্ভূত - রাজা বর্মন
৩১) নববর্ষের প্রত্যাশা - অরবিন্দ মাজী
৩২) চিঠি - স্মরজিৎ দত্ত
৩৩) শীতের সকাল- বিপত্তারণ মিশ্র 
৩৪) স্বপ্নের কবিতাওয়ালা - গৌরী মন্ডল 
৩৫) কালো মেয়ের উপাখ্যান - শান্তি রঞ্জন দে
৩৬) নতুন বছর - অসীম সরকার
৩৭) শুভ নববর্ষ - সোমা বিশ্বাস 
 শুভ নববর্ষ - ২ - - সোমা বিশ্বাস 




বর্ষবিদায়
অরবিন্দ সরকার

উত্তীর্ণ এক বৎসর কাল মাপামাপি,
নতুনের আগমন জীর্ন রুগ্ন ঝেড়ে,
যা গেছে তা যাক গত বন্ধ ঝাঁপাঝাঁপি,
রোমন্থনে থাক্ প'ড়ে নতুনের ঘরে।

জমা খরচ খাতায় বিভক্তে বিয়োগ,
চাতকের চেয়ে থাকা একবিন্দু বৃষ্টি,
দূর্নীতির নামাবলী শিক্ষক নিয়োগ,   
চারিদিকে অনিয়ম মিথ্যা বাক্য সৃষ্টি।

দুগ্গার মহার্ঘ ভাতা শতাংশ হিসাবে,
রাজকর্মচারী ফাঁদে কুকুরের রব,
বাঙালির উত্সবে সবে ক'রে খাবে,
বিগত বছরে তৈরী বেকারীর হাব।

স্বাগতম নববর্ষ বিশ্ব ক্যালেণ্ডারে,
পুরোনো বিদায় হোক নব কলেবরে।

রচনা : ৩১/১২/২০২১


সঙ্কল্প
সৌরভ পাত্র 

নতুন নতুন আশা নিয়ে 
চলবো বিশ বাইশের সাথে;
সঙ্কল্পে সবার মন জয়ে 
এগিয়ে যাব নতুন পথে।

ভাঙ্গাহার,মশানঝাড়,খাতড়া,বাঁকুড়া,পশ্চিমবঙ্গ,ভারত,722121
দিনাঙ্ক-31/12/2021

সোনালী রোদ
শাশ্বতী দেব

আমি  সুদূরের  পিয়াসী,

অপেক্ষায় থাকি  শুধু  কাব্যরসের।

যেখানে  পাব  একটুকরো  সোনালী  রোদের  আভাষ,

সোনালী  রোদটা  কাছে  এসেও  বহু  দূরে ;

শুধু  চাই  সোনালী  রোদকে  হাতের  মুঠোয়  নিতে । 


মাশুল
সুচেতা অধিকারী

তোমার কথায় ঘর বেধেছি,
তোমার কথার জালে ফেসেছি আমি।
মা বলেছিলেন, ভুল করছিস,
আমি বলেছিলাম কাউকে ভালোবসা টা কি ভুল?

তোমার সাথে সাথ দিয়েছি,
তোমার হয়ে করেছি সবেতে লড়াই।
তাই জন্যই তো এখন করতে পারো নিজেকে নিয়ে বড়াই,
তোমার আড়ালে তোমার হয়ে লড়ছে কে?
সত্যিকারের ভালোবসার মানুষ আবার কে।
মা বলেছিলেন ভুল করছিস,শুনিনি সে কথা,
সেজন্য তো এখন আমি ফলভোগ করছি হেথা।

লরাই করে আমিও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি,
বোঝাতে পারি চাইলে কি হতে পারি আমি।
তোমায় হারিয়ে আমার কি সুখ?
তোমার সুখ ই আমার সুখ।
মা বলেছিলেন ভুল করছিস,বলেছিলাম করছিনা কোনো ভুল,
তাইতো আমায় এখন তার দিতে হচ্ছে মাশুল।

নির্জন দুপুরে
বারিদ বরন গুপ্ত

ভৌতিক দুনিয়া নিয়ে মানুষের কৌতূহল চিরদিনের ‌। সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই মানুষ এই জগতের বিষয়ে কমবেশি কৌতুহলী হয়ে পড়েছে, তাই বিশ্বসাহিত্যে ভৌতিক গল্পের একটা আলাদা জায়গা রয়েছে ‌। বিশ্বের প্রায় সব নামজাদা লেখকরা তাদের জীবনের দেখা বা শোনা ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা লিপিবদ্ধ করেছেন, বিশ্বসাহিত্যে ভৌতিক গল্পের কদর চিরকাল ছিল আজও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমার জীবনে ভৌতিক অভিজ্ঞতার ঝুলি টাও কিন্তু কম নয়, বেশ কয়েকবার ভৌতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, অনেক পরিস্থিতির কূলকিনারা করতে পেরেছি, আবার অনেক ভৌতিক ঘটনার রহস্য আজও উন্মোচন করতে পারিনি, সেই রহস্য আমাকে আজও‌ তাড়া করে, আজকে তোমাদের এমনই এক বিরল লোমহর্ষক অভিজ্ঞতার কাহিনী শোনাবো‌।

                  আজ থেকে প্রায় চল্লিশ বছর আগের কথা, তখন আমি সবে বড় স্কুলে ভর্তি হয়েছি, সম্ভবত ভাদর মাস হবে‌, গ্রামের সামনে পুকুরের ধারে ঘাস কাটতে গেছি, দুপুর দুটো আড়াইটা হবে, তাড়াতাড়ি ঘাস কাটতে হবে, কারণ গরুকে খাওয়ানোর মতো ঘাস একদানা ও বাড়িতে নেই ‌। কথায় বলে ভাদর মাসে উদরের জ্বালা, যেমন দু‌ -পায়ীদের তেমনি চারপায়ীদের ও, বাড়িতে এক আটিও খড় নেই, মাঠের ঘাসই গরুর একমাত্র আহার, কিন্তু খেলা দেখার শখ ও পূরণ করতে হবে, বিকেল চারটেয় পুটশুড়ী স্কুল মাঠে ফুটবল ম্যাচ আছে, তিনটের মধ্যে ঘাস কেটে বাড়ি ফিরতেই হবে, তাই কোটালগড়ের সামনের আল গুলো থেকে ঘাস কাটার জন্য বার হলাম। উল্লেখ করা দরকার যে তখনকার দিনে গ্রামগঞ্জে ফুটবল খুবই জনপ্রিয় ছিল, কারণ ক্রিকেট তখনও এতটা জাঁকিয়ে বসেনি, ছেলে-বুড়ো সকলেই ফুটবলের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ ছিল, তখনকার দিনে গ্রাম গঞ্জের ফুটবল মাঠ গুলোতে দর্শক কানায় কানায় ভরে উঠত‌। তাছাড়া তখন টিভির রেওয়াজ ছিল না, ফুটবল - ক্রিকেটের ধারাবিবরণী শোনার একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও, সাতের দশকের কলকাতা ময়দান সরাসরি ধারাবিবরণী আমরা রেডিও মারফত শুনতাম, প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটাতাম‌। আজ সে সব অতীত!

                      যাই হোক খুব তাড়াতাড়ি ঘাস কাটার জন্য নির্জন দুপুরে সামনের কোটালগড়ের জমির আলে হাজির হলাম, তখন কোটালগোড়ে ছিল পুরো জঙ্গলে ভরা, চারিদিকে কাটা জাতীয় গাছ, তার মধ্যে কয়েকটা অর্জুন গাছ মাথা তুলে গ্রামের দিকে চেয়ে থাকত। কোটাল গড়ের উত্তর-পশ্চিম কোণের একটা জমির আলে ঘাস কাটছি, এরই মধ্যে মাঝে মাঝে কোটাল গোড়ের ভেতর থেকে বিকট আওয়াজ ভেসে আসছে, মনে মনে ভাবলাম কোন গরু হয়তো জঙ্গলের ভেতর থেকে ডাকছে ‌। আবার কিছুক্ষণ পর ঘোড়া ডাকার আওয়াজ কানে এলো, এইভাবে থেমে থেমে নানা বিকট শব্দ ভেসে আসছে, সেদিকে আমার নজর নেই, মন পড়ে আছে ফুটবল মাঠে, যেনতেন প্রকারে তিনটের মধ্যে বাড়ি ফিরতেই হবে, তাই একমনে দ্রুত ঘাস কেটে চলেছি‌। যাইহোক ঘাস কাটা শেষ, এবার বস্তায় ভড়ে বাড়ি ফেরার পালা।

                           কিন্তু আশ্চর্য! একি! ঘাস বস্তায় ভরতে গিয়ে দেখি একটাও ঘাস নেই, চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম, কেউ কোথাও নেই, তাছাড়া এত তাড়াতাড়ি ঘাস তো কেউ নিয়ে যেতে পারবে না, কোন কূলকিনারা খুঁজে পেলাম না, আমি হতভম্ব! যাইহোক বসে থাকলে চলবে না, পুনরায় অন্য একটা আলে গিয়ে ঘাস কাটতে শুরু করলাম, ঘাস কাটছি আর মাঝে মাঝে তাকাচ্ছি! তারপর হঠাৎ যা দেখলাম, একটা অলৌকিক ঘটনা, গরু বা ঘোড়ার মাথার মতো একটা বস্তু ধীরে ধীরে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। এই দৃশ্য দেখার পর আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না, ঘাসের থলি, কাস্তে ফেলে দিকবিদিক শূন্যে পড়িমড়ি করে মারলাম দৌড়, 
এক দৌড়ে ছুটে এলাম শান্তিগড়ের পাড়, একবার পিছন ফিরে তাকালাম, শেষ ভাদরে গোটা শরীর দিয়ে টপ টপ করে ঘাম ঝরছে, দু-একজন চাষী উত্তর মাঠে যাওয়ার জন্য আল পথ ধরেছে, আমার এই অবস্থা দেখে তারা আমার কাছে এসে কারণ জিজ্ঞেস করল, আমি বললাম- 'না, কিছু না! খেলা আছে তাই ছুট ছিলাম।'

                    উদাস নয়নে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরলাম, খালি হাত দেখে বাবা জিজ্ঞেস করলো -"কিরে ঘাস কাটতে যাসনি?" সত্যি বলতে কি আমি কথা বলার মত ক্ষমতা যেন হারিয়ে ফেলেছি, একি দেখলাম! নিজের চোখ কে যেন বিশ্বাস করতে পারছি না, মনে হচ্ছে অজানা জগতের এক অচেনা অনুভূতি! আমার উপর দিয়ে যেন একটা ঝড় বয়ে গেল।

                      পরপর দু গ্লাস জল খেয়ে, চোখেমুখে জলের ঝাপটা দিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলাম, কিছুটা সম্বিৎ ফিরে ধীরে ধীরে ‌‌ বাবাকে পুরো ঘটনাটা জানালাম‌। বাবা পুরৈ ঘটনাটা মন দিয়ে শুনলেন এবং কিছু বললেন না ,শুধু কয়েকবার ঘাড় নাড়লেন, বাবার ঘাড় নাড়া দেখেই বুঝতে পারলাম যে অনুরুপ ঘটনাটা হয়তো বাবার আগেই জানা ছিল! বাবা বললেন-"এটা তেমন কিছুই নয়! এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছে, এর একটা কাহিনী আছে!" তারপর শোনালেন সেই কাহিনী--

                 " অনেকদিন আগেকার কথা, এই অঞ্চলে জমিদার ভূতনাথ চৌধুরীদের একটা সুদৃশ্য ঘোড়া ছিল,
ঘোড়সওয়ার কোটাল গোড়ের বেড়ে ঘোড়াটাকে চড়াই করছিল শেষ ভাদরের এক বিকেলে, হঠাৎ তুমুল বৃষ্টি এবং বজ্রপাত শুরু হয়, সঙ্গে সঙ্গে ঘোড়াটি বজ্রাহত হয়,
সেই থেকে ওই নির্দিষ্ট দিনে কেউ ঘাস কাটতে গেলে ঘোড়াটি ওই ঘাসে দৃষ্টি দেয় ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য। কারন ঘোড়াটি ঘাস খেতে খেতে মারা গিয়েছিল, তাই তার অভুক্ত আত্মা ঘাসের সন্ধানে ছোটে‌!" 

"আর কখনো ঘাস কাটতে ওদিকে যাবে না?"- বাবা বললেন‌।
'ঠিক আছে'- আমি বললাম।
এদিকে দুজন বন্ধু অনেকক্ষণ ধরে আমার জন্য দরজায় অপেক্ষা করছে খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য, আমি একটু আমতা আমতা করছি, যদিও বাবার কথায় অনেকটাই নিজেকে স্বাভাবিক করে ফেলেছি, এখন মনে হচ্ছে এটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা! আমার এই দোটানা পরিস্থিতি দেখে বাবা বললেন- "যাও মাঠে খেলা দেখে এসো!"

                   এরপর অনেকদিন অতিক্রান্ত হয়েছে , বেশ কয়েক বছর হল বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, এদিকে কোটাল গোড়ের জঙ্গল গাছপালা সব সাফ হয়ে গেছে, আশেপাশে গড়ে উঠেছে জনবসতি, জানিনা আজ ও গোদানা ঘাসের জন্য হানা দেয় কিনা? আজ শেষ ভাদরে নির্জন দুপুরে গল্প লিখতে বসে শূন্য দৃষ্টিতে চেয়ে আছি কোটাল গোড়ের দিকে, চারিদিক খাঁ খাঁ করছে, শুধু ন্যাড়া বেল গাছটা মহাকালের সাক্ষী হয়ে আমার পানে একদৃষ্টিতে চেয়ে আছে।

ঠিকানা গ্ৰাম সাহাপুর পোঃ আসানপুর থানাঃ মন্তেশ্বর জেলা পূর্ব বর্ধমান

সময়
মনীষা ঘোষ 

সেসব এক সময় ছিল,
আমার আমিকে খুঁজতে হতো না।
আজকে খুঁজতে হয় তোমার তুমি কেও,
সে সব এক সময় ছিল।

ছোটবেলার সেসব ছবি,
কবে কোথায় হারিয়ে গেল,
সে সব এক সময় ছিল।

আজ কে শুধু 2021 কে নয়,
আজকে যেনো হারিয়ে যাচ্ছে।
 ছেলেবেলার রোমাঞ্চকর কিছু স্মৃতি ,
ভালোবাসার রঙিন কল্পনা ।

সেসব একসময় ছিল,
হয়তো আজও আছে অল্প কিছু,
মাটির উনুন আছে তা হয়তো ভাঙ্গা।
রান্নার জন্য মাটির হাঁড়ি আছে,
রান্না করার জন্য শুধু লোক নাই।
তাল গাছ আছে খেজুরের রসও হয়,
 কিন্তু আগের মত সময় নাই।
আজও সন্ধ্যে হলে প্রদীপ জ্বলে,
 তবে সারা ঘর নয়।
আজও আলো জ্বলে বিদ্যুৎ এর আলোতে ,
তাই রাতের প্রদীপ নিভে গেছে।

সে সব এক সময় ছিল,
যখন তুমি ছিলে না,
শুধু ছেলেবেলা ছিল ।

৩১/১২/২০২১

আলোচ্ছ্বাস
আকাশ ভগত

মালদা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত



চারু,

কোনো এক সোনালী দিনের শেষে,

হারিয়ে ছিলাম আলোর খেয়ালের বশে।

কখনো দেখেছি তাঁকে নব-দুর্গা বেশে,

আবার কখনো রাত পরীদের দেশে।


দেখেছি তাঁকে করতে,

কখনো প্রজাপতি হয়ে বাগানে প্রবেশ,

ফুলেদের চেয়ে মধু হরণের উদ্দেশ।

কখনো লক্ষ্মীরূপি রান্না ঘরের দেবেশ।

কখনো সরস্বতীরূপি ডাইরিতে শব্দের সমাবেশ।


সারাক্ষণ,

হৃদয়ে কেমন যেন তরঙ্গ উচ্ছ্বাস,

যেন আমি ভিজছি, চারিদিক জলোচ্ছ্বাস।


তবুও,

রখিতে তাঁর মান আর বিশ্বাস,

বেঁধেছি আপনে, ভুলে সেই উচ্ছাস;

শুধু পেতে আলোর স্পর্শের আভাস...

হ্যাপি নিউ ইয়ার
সজল মণ্ডল

 ফাস্ট জানুয়ারির প্রারম্ভে
বন্ধু জানাই তোমায় স্বাগতম
 নতুন বছরের প্রথম দিনে
  বন্ধু তোমার রইল নিমন্ত্রণ
তুমি এসো বন্ধু দেখব তোমায়
      আমাদের মাঠ পাড়া
মাঠের মধ্যে আছে ফসল
         সরষে ফুল ভরা
শীতের সকালে ঐ মিঠা রৌদ্রে
        শিশির ভরা ঘাসে
গাছি ফেরে ভোর সকালে
          ঠিলা ভরা রসে
একে একে কৃষক শ্রমিক
      চলে তাদের কাজে
ফিরে আসে সকলে তারা 
         শ্রম শেষে সাজে
দেখব তোমায় ঘুরে ঘুরে
     সকাল থেকে সন্ধ্যা
ইচ্ছা হলে বন্ধু এসো তুমি
রইল নতুন বছরের শুভেচ্ছা।।


বয়স টা যেন কমে না যায়
অমল ভট্টাচার্য্য 

এই রাত যেন শেষ না হয়,
আয়ু যেন আর কমে না যায়।
থাকতে চাই আরও কিছু সময়,
এই রাত যেন ভয়কে হারায়।
হারাতে হারাতে হারিয়েছে সব,
এখন তো আমি বিবেকহীন শব।
বিবেকের আলো আজ অন্ধকারে,
দিবা রাত্র সে যে কেঁদে মরে। 
নতুন আসুক পুরাতনের কোলে,
অকুতোভয়ে লাগাবো তাকে গলে।
নতুনের তাপে শেষ হোক বিষ পুরাতনের, 
তারপর যেন দেখি আলো নতুনের। 
এই রাত যেন শেষ না হয়,
বয়স টা যেন আর কমে না যায়।

নববর্ষ 
অভিজিৎ দত্ত 

নতূন বছর দিচ্ছে ডাক 
সব অন্ধকার মুছে যাক 
নববর্ষের নতূন আলোকে
সব কালিমা যাক ঘুচে।

নববর্ষে করবো শপথ
পরিবেশ রক্ষায় আমরা
সব হবো তৎপর।
নতূন, নতূন গাছ লাগাবো 
পরিবেশকে সুন্দর করবো।

নববর্ষে করবো শপথ 
নিজেরা ভালো করে তৈরি হয়ে
দেশসেবায় হবো তৎপর। 

নববর্ষ দিচ্ছে ডাক 
মানুষের মধ্যে সব ভেদাভেদ 
দ্রুত ঘুচে যাক। 
নববর্ষ দিচ্ছে ডাক 
শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাক। 

নববর্ষে করবো শপথ 
দেশরক্ষায় আমরা সব
হবো তৎপর।


ভালবাসলে
মুনমুন ঘোষ

ভালবাসলে মনটা হয়ে যায় চঞ্চলা নদীর মত।
আঁকা বাঁকা পথে চলে কুলকুল করে,
কখনো প্রেমিকের স্পর্শে আনন্দে নৃত্যে মেতে ওঠে,
কখনো বিরহ ব্যাথায় নীরবে বয়ে যায়।

ভালবাসলে মনটা হয়ে যায় পাহাড় সমান উঁচু।
কখনো আকাশকে ছুঁতে চায় 
আনন্দে ফুলও ফোটায় নিজের গর্ভে,
আবার কখনো বা নীরবে গুমরে কাঁদে বিরহ দহনে।

ভালবাসলে মনটা হয়ে যায় প্রজাপতির মত।
রঙিন পাখা মেলে দেখায় তার রুপ,
আনন্দে পতপত করে এখান ওখান ওড়ে,
আবার কখনো দুঃখ বিরহে গুটিয়ে রাখে নিজেকে। 
জন্ম দেয় শুঁয়োপোকার।

নব অঙ্গীকার 
রবি শঙ্কর মুখোপাধ্যায়

নতুন বছর হয়ে উঠুক 
         অনেক মধুময়, 
তুমি আমি আমরা সবাই 
         চাই গো সুসময়।

ভালো মন্দে কাটলো মোদের 
         পুরোনো সব দিন, 
বিশ্বাস করি আগামীতে 
         আসবে যে সুদিন।

"করোনা"রই পাল্লায় পড়ে
         সবার মাথায় হাত!
অর্থনীতির অবস্থাটা 
         পুরো কুপোকাত্। 

পড়াশুনো গোল্লায় আজ 
          ভবিষ্যতের বাঁশ! 
জানিনা কোথায় থামবে এই 
           ভীষণ সর্বনাশ।

যতই কঠিন সময় আসুক 
          রাখতে হবে ধৈর্য, 
আরও যে বাড়াতে হবে 
           আমাদেরই স্থৈর্য।

ধনী -গরীব সবার ঘরে 
         আসুক সুখের দিন,
শান্তি স্বস্তি সুখ নিয়ে 
          কাটুক প্রতিদিন।

অবসর
তরুণকুমার মুখোপাধ্যায়

বহুদিন পরে আয়নার সামনে এক-কলি অবসর
টুকরো টুকরো স্রোত নেমে আসে জানলা দরজা ধরে
ক্যানভাসে আঁকা হয় অবিশ্রাম বীজগণিত-বাক্য
দিবারাত্রির কাব্য সাঁতরে পার হয় শাওয়ার-ধোওয়া গোলাপ
অবসর যাপন চলে…
আয়নার সামনে দেখা হল অপ্সরার সঙ্গে
নেমে আসে ধারাজল কবিতার সুরভিত জ্যোৎস্না
বাষ্প ওঠে, কাব্যের স্রোতেরা লালিম কটাক্ষ ফেলে
লোভাতুর স্মৃতিকে পাথেয় করে যাপিত হতে থাকে 
ঝরণাবেলার নিঝুম অবসর…


মেঘ সংক্রান্ত
তরুণকুমার মুখোপাধ্যায়

মেঘের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আজন্ম
আমার জন্মের সময়ে নাকি বৈশাখী-মেঘ
বিকেল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত সুখবর নিতে
থমকে দাঁড়িয়ে ছিল
তাই মেঘ বললেই আমার চোখে ভেসে ওঠে
একরাশ চুড়ো-করা চুলে এলোমেলো কোনো 
আটপৌরে যুবতির মুখ যার দু'চোখে অনবরত 
খেলা করছে আসন্ন কোনো সুখবরের 
পশলাখানেক বিদ্যুৎ…

হ‍্যাপি হ‍্যাপি নতুন নতুন
দেবারতি গুহ সামন্ত

কালকে রাতের হ‍্যাংওভার কাটেনি এখনও,
উঁহু,কোন রঙিন পানীয়র হ‍্যাংওভার নয়।
হ‍্যাংওভার আমার নিজস্বতাকে আবিষ্কারের,
আমার আমিত্ত্বকে খুঁজে পাওয়ার ইতিহাস।

কোভিডের পর আসতে চলেছে ওমিক্রেণের ঢেউ,
লকডাউনে সময়টা কাটছিল ভীষণ বোরিং।
ঘরবাড়ি সাফ করতে করতে পেলাম একটা খাতা,
যাতে ছিল আমার নিজের হাতের আঁকিবুকি।

মনে পড়ল,একসময় ছবি আঁকতে খুব ভালোবাসতাম আমি,
রঙিন আঁচড় আর মনের কল্পনা মিলে মিশে একাকার।
সময়ের সাথে সাথে ইচ্ছেতে পড়েছে ভাঁটা,
কোথায় যেন হারিয়ে ফেলেছি আমার আমিকে,ঝাপসা দুচোখ।

সব কাজকর্ম উঠল মাথায়,বসে পড়লাম ছবি আঁকতে,
আজ নতুন বছরের শুরু,ছবির টপিক তাই বাছলাম বর্ষবরণ।
আঁকা শেষ করে ছবি তুলে পোস্টালাম ফেসবুক ওয়ালে,
আমার আঁকা ছবি ভেসে গেল লাইক,শেয়ার,কমেন্টে,আমি আপ্লুত,বাক‍্যহারা।

০১/০১/২০২২

          
         অন্ধের দিনরাত
       - অরবিন্দ সরকার

                    এ
                  এক
                বিদায়ে
               আগমনে
              একই সুর
           মদের ফোয়ারা
         নাচ গান হুল্লোড়
       মর্তে নেমেছে অসুর।
     পুরানো নতুন একই
       স্বাদে গন্ধে ভরপুর,
         এলে গেলে বয়েই
           গেল মনোভাব,
             বাজি পুড়ুক
                কি মরুক
                  নেশায়
                    চুর
                    সে।


নতুন বছরের প্রার্থনা
শিশির মল্লিক
তারিখ: ৩১শে ডিসেম্বর,২০২১

ওহে নতুন বছর
তোমার ইচ্ছে কি?
পুরোনো তো কষ্ট দিল
অনেক সয়েছি।
"কোভিড" কিম্বা "আমফানেতে"
"যসের" ভয়ঙ্কর
পেরিয়ে এসেও দেখি
আবার ভয়ের ঝড়।
"ওমিক্রন" আসছে তেড়ে
ওগো নতুন বছর
অনেক আশা তোমার কাছে
বাঁচাও মৃত্যু ঝড়।
বন্ধ ঘরের অন্ধকূপে
অনেকদিন ধরে
আমরা সবাই লড়ছি কেমন
ভয়ের ভূবণ জুড়ে।
নতুন বছর ওগো নতুন বছর
নতুন আলো জ্বালাও বুকে
পুরোনো সব ভুলে সবাই
থাকি যেন একটুখানি সুখে।

লুকোচুরি
সুজয় মজুমদার 

চোখ, শুধু ওই এক জোড়া চোখ

পারে না তোমাকে লুকাতে

আমার থেকে দূরে,

দূরে উঁচু পাহাড়ের চুড়োয়

যেখানে দুধ সাদা বরফের চাদরে

মুখ লুকিয়ে থাকতে পারে না চাঁদের আলো।

 পৃথিবীর সুমেরু প্রান্তে

হাড় হিম করা শীতল রাতে

জেগে থাকে রাতের সূর্য

শুধু স্বপ্নেরা ঘুমের মধ্যে এসেই

হারিয়ে যায় অন্ধকারের রাজ্যে।

কৈশোরের প্রেম
সুব্রত চক্রবর্ত্তী

ফেলে আসা সেই দিনগুলি আজ ফিরে আসছে স্মৃতিতে । আজকের মতো এত জনপ্রিয় না হলেও, বড়দিনের আনন্দটা ছিল একটু অন্যরকম। আসলে তখন বাৎসরিক পরীক্ষা হত ডিসেম্বরে। আর প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হত ২৪ শেষ ডিসেম্বর। তখনো ছিল প্রেম, ভালোবাসা, ভালোলাগা। সবথেকে বড় কথা নবম শ্রেণীর ছাত্রদের ফুলপ্যান্ট ও মেয়েদের শাড়ি পরার অধিকার জন্মাত। নিজেকে একটু বড় মনে হত। তবে,বাবা ও মায়ের শাসন উপেক্ষা করে বা গুরুজনদের অমান্য করে চলা যেত না। চলতে পারতাম না। ফলে, বিধিনিষেধের রশি থাকলেও, ছিল আন্তরিকতা,সম্মান,স্নেহ সবই ‌। যাইহোক,সে বছর দশম শ্রেণীতে উঠেছি। সকলের সতর্কবাণী, ফাইনাল ইয়ার। ভালো করে পড়তে হবে ও স্টার,লেটার পেতে হবে। তবু বড়দিনের সকালে সবাইকে নিয়ে বাবা বসে কেক কাটলেন, সাথে জয়নগরের মোয়া ও একটি করে কমলালেবু । সকলের খাওয়া শেষে মা ও বাবা ঢুকলেন রান্নাঘরে। আমরা সকলে অবাক। কি ব্যাপার ! কৌতুহলী মন... অথচ জানতে পারব না। তবেই আনন্দ মাটি। খানিকক্ষণ পরে এলেন,বাবার কজন বন্ধু ও তাদের পরিবার। আমরা সকলে তখন আনন্দে ভাসছি। এর মধ্যে বাবার অন্য এক বন্ধু ভোলা কাকু তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে উপস্থিত। বাবা ও মায়ের সে কি যত্ন। আমার ছোটো পিসি ও কাকা ওকে নিয়ে ব্যস্ত। মা বললেন আহারে, মা মরা মেয়েটা কি জানি কি খায় না খায়। কাকা ও পিসি আগলে রেখেছে। তার রূপ ও পটলচেরা চোখে আমি মুগ্ধ। ও সেই সময় নিজেকে মনে হচ্ছিল....থাক।
     দুপুরে রান্না শেষে, ভোজনপর্ব । এবার বাবা,মা একটু দায়িত্ব দিলেন সবাইকে নিয়ে খেতে বসাতে। আমি ও রাজি। শুরু হল তার মন জয় করার প্রয়াস। তাকেই একটু বেশি প্রায়োরিটি দেওয়া। অগত্যা,সুযোগ এল প্রথম সুযোগেই ছক্কা। নাম জানলাম, রিমা। খাওয়া দাওয়া শেষ করে, রিমাকে নিয়ে ছাদে। সেখানে একটু আধটু ওর মনের ভিতর নিজেকে বসানোর চেষ্টা। তবে.....
     যতদূর,চোখ যায় তখন ছিল সবুজের সমারোহ। আমাদের,বাড়িটা ছিলো তেমন এক সবুজে ঘেরা। আমার পড়ার ঘরের থেকে দেখা যেত সরস্বতী নদী,যে নদী ছিল এক সময় স্রোতস্বিনী,কালের নিয়মে আজ সে হারিয়েছে তার রূপ। আজ বড়দিন,আমি ও ১৪ পেরিয়ে ১৫ - তে । সেদিনের বড়দিনের কৈশোরের প্রেম, মহীরুহ হয়নি। বড়দিনের এই উৎসবের মাধ্যমে মন থেকে মনে যাওয়ার যে প্রচেষ্টা তা হয়ত, প্রকৃতির নিয়ম মেনে হয় । রিমা হয়ত আজ কোনো মধ্যবয়স্কা ঘরণী। আমি ! কলমের দৌলতে তোমাদের ঘরে। উৎসবের আমেজ আজো আছে,তবে নেই সেই কৈশোরের প্রেম, বড়দিন।

#কলকাতা।

তারিখ:- ২৪.১২.'২১

গাঁয়ের পুরোনো শীত-সন্ধ্যা
অঞ্জলি দে নন্দী, মম

পুরোনো বনেদী নন্দী বাড়ী।
বাঙালী পটু শীতে পিঠে খাওয়ায়।
মাটির জোড়া উনুন, 
গাঁয়ের রান্না-দাওয়ায়।
কাঠের জ্বালের আগুন।
মাটির হাঁড়ি।
ফুটছে তাতে জল।
হাঁড়ির মুখে
মাটির ফুটো সড়া।
তার ওপরে ভাপছে পিঠের দল।
ঠাকুমা পিঠে সলেই চলেছে সুখে।
ফোগলা মুখে তার পান ভরা।
শ - খানেক করছে পিঠে,
হরেক রকম - নোনতা, মিঠে।
পৌষের শেষ সন্ধ্যা সেটি।
ঠাকুমা বানাচ্ছে পিঠে।
সে বঙ্গের আদি-বেটি।
পার্বন রক্তে তার।
পিঠেপুলি ভরা তার সুখের সংসার।
সারাটি জীবন দেয় সে পিঠে উপহার।
স্বর্গের চেয়েও বড় তার এই পরিবার।
আহা এ বঙ্গের বড় শখের আহার!
স্বাতিকতা বৈশিষ্ট্য যার।

ভালো থেকো
শুভঙ্কর মজুমদার
০১/০১/২০২২



একুশের ঐ তারুণ্য আজ
যাচ্ছে বুঝি চলে। 
নতুন এবার বাইশ বুঝি
বৃদ্ধদের ঐ দলে। 

চোখটি বুঝে মুখটি বুঝে
চুপটি করে থাকো। 
কাউকে তুমি নিজের মেনে
সত্য বল নাকো। 

জীবন তোমার নদীর মত
কচুরিপানায় ভরা
আপন মনে করে শুধু
বৃথা পরিষ্কার করা। 

একুশের ঐ তারুণ্য আজ
যাচ্ছে বুঝি চলে। 
সবাই তোমারা ভালো থেকো
মিথ্যা কথা বলে।

লুপ্ত আশা
     মোঃ মাজহারুল ইসলাম


মনে কিছু আসা ছিল, চোখে ছিল স্বপ্ন
নাওয়া খাওয়া ছিল, কর্ম ছিল রত্ন
মনে ভাব ছিল, কবিতা ছিল নেশা
তখন স্বাধীনতা ছিল, আড্ডা ছিল পেশা
মুখে হাসি ছিল, মনে ছিল আনন্দ
সবার উপার্জন ছিল, পরিবেশ ছিল স্বাচ্ছন্দ্য 
রাস্তায় মানুষ ছিল, চলত তখন গাড়ি
তখন আত্মীয়তা ছিল, আসত সবে বাড়ি
কৃষকের মাঠে ফসল ছিল,সুখ ছিল মনে
পরিবেশটা প্রফুল্ল ছিল, বিয়ে হত বর কণে
দোকান পাট খোলা ছিল, ন্যায্য ছিল মূল্য
আমদানি রপ্তানি বন্ধ হল, মূল্য হল স্বর্ণের তুল্য
আনাজ পাতির দাম বাড়ল, বাড়ল অনাহার
করোনার আঘাতে মরছে যত, মরছে বেশি ভুখাহার
হারালো আসা হারালো স্বপ্ন , বাড়ল মুসিবত
মুমূর্ষু হয়েছে সবে, করছে ওছিয়ত
এখন আর কিছুই নাই, লুপ্ত হয়েছে আসা
কারো উপার্জন নায়, বন্দী হয়ে বাসা
মহামারি করেছে আঘাত, সংকট এল ভবে
মরছে মানুষ অগণিত, আতঙ্কিত সবে। 

গোধূলি লগ্নে
মনির চৌধুরী 

সুপ্রভাতে পুব দিগন্তের আবহমান রক্তিম আভা বর্ণের,
উত্তপ্ত প্রজ্বলিত কিরণ যখন পশ্চিম দিগন্তে অস্ত যায়।
হেমন্তের পড়ন্ত বিকাল গড়িয়ে হেরি সন্ধ্যার দূর গগনে,
ধূসর বর্ণের আঁধার ঘনিয়ে আসে স্তব্ধ গোধূলি সন্ধ্যা বেলায়।

গোধূলির দূর ঐ নীলিমার ললিত আবছায়া রক্তিমা আকাশ,
ঘন কালো মেঘ বালিকার মাঝে বিষণ্ণতায় ছেয়ে থাকে।
চারিদিকে স্তব্ধতাময় ধূসর বর্ণের গোধূলি সন্ধ্যা নেমে আসে,
নির্জন নিরালয় জন শূন্যহীন ধু ধু তপ্ত কান্তার মরুর বুকে।

বেলা শেষে আনন্দদায়ক দিবস গুলো আজ হারিয়ে,
একাকিত্ব নীরব হয়ে রাতের আকাশ পানে চেয়ে থাকি।
বিষাদি মন মৃদুল বাতাসের পরশ পেতে ভুবন ছাড়িয়ে,
পাখিদের ডানা মেলে আকাশ ছুঁতে চাই স্বপ্নময় দুটি আঁখি।

সূর্যের লালচে আলো যখন দিনের শেষে বিলীন হয়ে যায়,
বিস্ময় হয়ে চেয়ে দেখি পাখিরা ফিরছে ঝাঁকে ঝাঁকে আপন নীড়ে।
অতীতের স্মৃতি মিলাতে গিয়ে দেখি কতকাল কেটেছে অবহেলায়,
তখন গোধূলি লগ্নে হারানো স্মৃতি গুলো বারবার মনে পড়ে। 

অপরূপ স্মৃতিবিজড়িত হেমন্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য রেখে!
মায়াবী অবুঝ মন একাকী যেতে চাই না আপন নীড়ে।
চির অচেনা ভুবন ছেড়ে যেদিন বিদায় নেব হাসি মুখে, 
সে দিন আর আসিব না ফিরে হাজার জনতার ভিড়ে।

নববর্ষ 
তপন কুমার তপু 

নতুন বছরের সোনালী আলো জীবনের জয়গানে,
হৃদয় নন্দিত সুন্দর গুলো ভরা থাক প্রতিটি প্রাণে। 

দিন বয়ে যায় দিনের মত
রাত বয়ে যায় কতো,
সাগর সিন্ধু পৃথিবীর পথে 
বয়ে চলে অবিরত। 

ক্লেশ তাপ যত জরাজীর্ণতা
ধুয়ে মুছে যাক জীবনে, 
পরাজয় গুলো জয়ের মালা
সবাই পরুক ভূবনে।

নতুন এসেছে নতুন বর্ষে নতুন আলো মেখে,
নতুন করে মনে ও প্রাণে 
নতুনের দিও রেখে। 

পুরাতন কভু হতে দিওনা
নতুনই রেখো মন,
হৃদয়ে হৃদয়ে ভালবাসা দিয়ে 
ধন্য করো জীবন। 

এভুবনে যত নতুন এসেছে 
পুরাতন হয়ে যায়, 
নতুনের মত এজগতের পুরাতন করো জয়।

নববর্ষের নতুন দিনে কর যে অঙ্গীকার, 
মানুষে মানুষে ভালবাসা দিয়ে জীবন গড়ো তোমার।

০১/০১/২০২২

          সুস্বাগতম্ শুভ নববর্ষ
            -- অরবিন্দ সরকার
          বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ।

একটি বছর শেষে নতুন অধ্যায়,
ফেলে আসা দিনগুলো স্মৃতির ভাষায়,
নতুন আঁকড়ে বাঁচা আশা ভরসায়,
আগামীর দিনপঞ্জি সবুজ পাতায়।

মহামারী দেশ ছাড়ি ধ্বংস পরাজয়,
রোগ শোক কটুভাষা মুক্ত অবক্ষয়,
তোলাবাজি, ঘুসখোর অর্থ অপচয়,
আইন সবার হোক শাস্তি কারাভয়।

হিংসা দ্বেষ দলাদলি ঘুচুক প্রলয়,
ধার ক'রে ঘি খাওয়া দেশের সংশয়,
বাচালের মিথ্যাবানী দেয় বরাভয়,
আগামী প্রজন্ম এসো অমর অক্ষয়।

নব কলেবরে ধরা উদিবে নিশ্চয়,
জীর্ণ মলিনতা কেটে আগামীর জয়।

স্বাগতম নববর্ষ 
শিবপদ মন্ডল
    
চলে গেল পুরাতন- আবার এলো নতুন শুভ নববর্ষ! 
এসো হে বরণ করি, --- 
শান্তির দুর্গ গড়ি এ ভারত বর্ষ। 

হিন্দু মুসলমান--
এক জাতি -এক প্রাণ
এক সূত্রে গাঁথা। 

এসো ধরি হাতে হাত-
আনিব রাঙা প্রভাত
রচিব নতূন সভ্যতা। 

এসো বরণ ডালা ধরি---
নববর্ষ বরণ করি
ধূপ - দীপ- চন্দনে। 
এসো হে বিভেদ ভুলি -সম্প্রীতি গড়ে তুলি মৈত্রীর বন্ধনে। 

         
রচনা: ইং -১/০১/২০২২

ঝরাপাতা
সুমিত বৈদ্য ( ব্যারাকপুর) 

তীরের ফলার মতোন তোমার চাহনি 
আঁচড় দিয়ে যায় বুকের পাঁজরে;
তুমি হেসে ওঠো তৃতীয় পাণ্ডবের মতো
                  লক্ষ্যভেদ করে।

একরাশ গ্লানিভরা গ্লাস ঠেলে দাও আমার দিকে 
আমি মদিরার মতো পান করি অক্লেশে। 

একলব্য - নামখানা শুনে
গোত্র খুঁজতে বার হয়েছিল গুরু দ্রোণাচার্য 
                 - অর্জুনকে ভালবেসে। 

আশ্চর্য! কি ভীষণ মিল তোমার সাথে
তুমি আঁচড় দাও, রক্ত ঝরে 
দ্রোণ দক্ষিণা চায়, তখনও রক্ত ঝরে... 

আমি ঝরে যাই একলব্যের মতো
                        — মহাকাব্য হতে।


     নতুন বছর
                 রামদেব মন্ডল

হে নতুন বছর আমাদের নতুন জীবন দাও।
গতসনের ব্যাধির থেকে মুক্ত করে দাও। 
হে নতুন বছর আমাদের নতুন জীবন দাও।।

প্রকৃতি আজ বিরুপ। 
 বিধাতা আজ বৈমুখ।
প্রানীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। 
 হারিয়েছে নিজের হুঁশ। 
হে নতুন বছর আমাদের নতুন জীবন দাও।।

স্কুল কলেজ বন্ধ -খোলা। 
নতুন করে তালা ঝোলা। 
শিক্ষকরা আজ দিশাহারা। 
ছাত্র-ছাত্রি শিক্ষা হারা। 
হে নতুন বছর আমাদের নতুন জীবন দাও।। 

হে অন্তর্যামী ভগবান । 
সবই যে তোমারও দান। 
তোমার অন্তরে নেই শেষ। 
আজ বিজ্ঞান হয়েছে বিশেষ! 
হে নতুন বছর আমাদের নতুন জীবন দাও।।


বিদায় বর্ষ-২০২১
        তরুণ নস্কর

আজ নতুন বর্ষের আগমন
পুরাতন বর্ষের শেষ। 
মুছে যাক জীবন থেকে
যত হিংসা, বিদ্বেষ। 

ওগো বন্ধু মোর, শত্রু মোর
জাগিছে মনে সাধ। 
ক্ষমা করো মোরে বিদায় বর্ষে
পুরাতন যত অপরাধ। 

এসো পুরাতন কে বিদায় জানাই
নতুন কে করি আলিঙ্গন। 
পুরাতন কে ভুলে গিয়ে আজ
শুরু করি নতুন জীবন। 

৩১/১২/২০২১

রাগে অনুরাগে প্রেমের পরাগে
অক্ষয় কুমার বৈদ্য

দুচোখ ভরা স্বপ্ন আশা মুখোমুখি সুখ, 
আলতো বাতাস এলো চুলে
খুশির ঢেউয়ে দোদুল দুলে
নতুন প্রেমের উষ্ণ ছোঁয়া শিহরিত বুক।

নদীর জল কল কল কল একলা দুপুর, 
আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা
কদম ফুলের গন্ধ মেলা
শ্রাবণ ধারা ঝর ঝর ঝর জলের নূপুর । 

ক্লান্ত ডানায় শব্দমুখর ফেরারি গান
ঝাঁকে ঝাঁকে আঁধার নামে
অস্ত সূর্যের আলো থামে
পা ভিজিয়ে দিঘির ঘাটে প্রেমের কলতান।

প্রেমের পরাগ রাগ অনুরাগ মনের আলাপন, 
রাশি রাশি চাঁদের কণা
চিবুক ছোঁয়া ওদের মানা
তোমার প্রেমে নিবিড় টানে হৃদয় কথন। 

এখন ওসব ধূসর স্মৃতি হারানো সুর, 
আকাশ পানে তারার গানে
বেহাগ, বাহার আর ইমনে
প্রাণের ঘরে শুধুই দহন বেদনা বিধুর।

 অদ্ভূত 
 রাজা বর্মন

একটা মানুষ দরকার!
একটা মানুষ আসে আবার চলে যায় ।
পুরো এক জীবন ওই একটা মানুষকেই খুঁজে বেড়ানোর মতো নিঃশব্দে দ্বিতীয় কোন ব্যথা নেই।

তবে পাবো,পেতে পারি আর পাচ্ছি'র সমীকরণে মানুষ কেমন করে জানি বেঁচে থাকে।

সেজন্যে আমি বলি জীবন অদ্ভুত, চাওয়া-পাওয়া অদ্ভুত। 
তবে সুন্দর।

নববর্ষের প্রত্যাশা
অরবিন্দ মাজী
০১/০১/২০২২

শেষের মুখে চলে এলো দু'হাজার একুশ
অচিরেই এরপর দু'হাজার বাইশের শুরু,
পিছনের দিকে ফিরে তাকালেই মুস্কিল, 
চোখে আসে জল, বুকেটা করে দুরুদুরু। 

কতো মানুষ চ'লে গেছে করোনার কোপে, 
কতো গুণীজন ছেড়ে গিয়েছে এই দুনিয়া, 
অকালে কতশত চাষী করেছে আত্মহত্যা, 
ঋন রেখে, ছেড়ে গিয়েছে সংসারের মায়া। 

লেখাপড়া উঠেছে শিকেয় করোনার চাপে, 
আকাশছোঁয়া দাম বেড়েছে জিনিস পত্রের, 
গরীব মানুষগুলো কাটিয়েছ চরম বিপদে, 
ফড়েরা কামিয়ে নিয়েছে দু'হাতে ঢের ঢের। 

এভাবেই কেটে গেল দু'হাজার একুশ সালটা, 
শুধু বলি , এমন বছর যেনো আসে না আর- 
কখনও এধরার বুকে, চাই না চোখে দেখতে-
এমন মৃত্যু মিছিল, নিরীহ মানুষের হাহাকার... 

প্রার্থনা করি,আগামী বছরগুলো কাটে যেনো-
ভালোভাবে, ভ'রে উঠে যেনো সুখ - জোয়ারে, 
নির্মূল হ'য়ে গিয়েছে করোনা ,এ পৃথিবী থেকে,  
যেনো শুনতে পাই , সবাই নতুন একটি ভোরে... 

  © অরবিন্দ মাজী, কলেজপাড়া , ইসলামপুর, উত্তর দিনাজপুর। 
...

চিঠি
স্মরজিৎ দত্ত

প্রিয়া
দেখ এই পত্র হাতে পেয়ে অমর্যাদা কোর না। হয়তো করবে না অনেক প্রতিক্ষায় থাকো এই ছোট্ট টুকরো কাগজের জন‍্য। মোবাইল এর ম‍্যাসেজে বার্তা পাওয়া যায়; প্রেমের স্বাদ পাওয়া যায় না। তবে হ‍্যা আরালে গিয়ে পাঠ কোর। আর তুমি তো আবার আবেগ প্রবন হয়তো চিঠিটা হাতে নিয়ে অঝোরে কাঁদতে আরম্ভ করবে। অথচ কৌতূহল প্রিয় মানুষের জিজ্ঞাস‍্য মেটাতে পারবে না। তবে এটা ভেবেও সুখী হচ্ছি বহু বছর পর ঐ ছোট্ট টুকরোয় ক্ষনিকের তরে ভেসে উঠবো আমি। আপ্লুত আবেগে তোমার ওষ্ঠদ্বয় কিয়ৎ দীর্ঘায়িত হবে। নিঃশব্দে বলবে ভালোবাসি প্রিয়, কাছে আসবে কবে? বলছি আসবো। তবে এখন এর বেশি নয়। বিস্তৃত পরের চিঠিতে। তবে পোস্ট কার্ডে নয়। তা নিরাপদ পরিসর নয়, আবার বিস্তারিত এর জন‍্যও নয় উপযুক্ত। তাই পরেরটা এনভেলাপে। ভালো থেকো।
   
                          ইতি
             তোমার একান্ত আপন


শীতের সকাল
 বিপত্তারণ মিশ্র 
      
শীতের সকাল এলেই মনে আসে 
একটা কাচের গ্লাস ---
ভরপুর শিরশিরে ঠাণ্ডা খেঁজুর গাছের রস!
মনে আসে পরীক্ষা শেষের সকাল, 
চাদর গায়ে মিষ্টি সোনালী রোদ, 
সোনালী খড়ের গাদায় ঝাঁপাঝাঁপি,
আলোয় আলোয় চান ক'রে 
মার্বেল, ড্যাঙ-গুলি খেলা।
কাঁদরের চিকচিকে জল, 
তিরতিরে হাওয়া। 
সবুজ আলু আর হলুদ সরষের ভুঁই 
আলের ঘাস তখনো শিশিরে ভিজে, 
মনে হয় মিশে যাই সবুজের শিরায় শিরায় 
শীতল আলোর হাওয়ায়
মিলেমিশে একাকার 
ঘাসের শরীরে লীন।

24.12.21

স্বপ্নের কবিতাওয়ালা
গৌরী মন্ডল 
তারিখ—০১/০১/২০২২

আমি হতে চাই কবিতাওয়ালা—
ফিনিক্সের পাখির মতো দূর-দূরান্তে উড়ে যাবো আমার কবিতার ঝুলি নিয়ে..... 
মানুষের দুঃখ-যন্ত্রণা-কষ্টগুলোকে ঠোঁট দিয়ে কুড়িয়ে নেবো আমার ঝোলায়;
 বিনিময়ে আনন্দ-মুক্তি-সুখের কবিতা বিলিয়ে দেবো দেশে দেশে। 
আমি কবিতাওয়ালা হবো—
 কলমের কালো কালিতে ফুটে উঠবে অসহায় মানুষ ,অনাথ শিশুদের অবয়ব ! 
 আমার কবিতা জায়গা করে নেবে ধর্ষিতা, অজানা আদরে ‘মা’ হওয়া পাগলীটাও.... কবিতায় ভাষা পাবে মূক-বধির অনাহুত মানুষ। 
ভালো মুখের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মুখোশ গুলোকে 
কলমের আঘাতে পর্ণমোচী বৃক্ষের মতো নিরাভরণ করে দেবো । 
 শ্রমিক,কৃষক, মুটে, মজুর থেকে শুরু করে অতি দাম্ভিক ধনী মানুষকে কবিতার সুতোয় বাঁধবো। 
শাসক ও শোষিতের ভেদাভেদ চিরতরে বিলীন করে আমার কবিতা আনবে নতুন ভোর!!
ভোরের সোনালী আলো গায়ে মেখে সকলে একসাথে গেয়ে উঠবে ঐক্যতান !!
সকলে সকলের দুঃখ ভাগাভাগি করে নেবো;
দেশ হতে দেশান্তরে ছুটে যাবো শান্তির বার্তা বাহক হয়ে....
জাতপাতের ক্ষুদ্র প্রাচীর ভেঙে চুরমার করে দিয়ে 
সর্বধর্ম সমন্বয়ের পৃথিবী গড়ে তুলবো!
এই পৃথিবী হবে শুধুই স্বপ্নময়.......
                                         আনন্দময়!!

কালো মেয়ের উপাখ্যান
শান্তি রঞ্জন দে

মৌটুসী অনায়াসে হতে পারতো 
কবির কল্পনার প্রেয়সী কৃষ্ণকলি 
শ্যামলা বরণ রূপবতী কন্যে 
ভাগ্য দোষে সব হারানো 
শূন্যতার ইতিহাস তাঁর জীবনের 
বাজারে সব্জি বেচে রোজ 
নিত্য ক্লান্ত দিন যাপন 
পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি চাটে 
শরীর জুড়ে অস্বস্তির উপলব্ধি 
নিস্পৃহ জীবিকায় ঘেন্নার স্তূপ।           

নতুন বছর   
অসীম সরকার

তোর কপালে, ঘষবো কপাল?
যদি কপাল খোলে!
মন্দ ভাগ্য হলে নাকি---
ভাগ্য শূন্যে দোলে।

এসে গেল নতুন বছর...
দুই হাজারের বাইশ
জেসাস ক্রাইস্ট জেসাস ক্রাইস্ট
রাখবে আমার উইশ?

দাও না একটা নিরোগ বছর
থাকুক সবাই খুশি
পৌষ পার্বণে পিঠে খাবো
সঙ্গে পুলি চুষি।

দুটি চোখ-কান খোলা থাকুক
মাস্ক ঢাকা থাক নাকে,
আপদ রোগের অণু কণাও
না ঢোকে মাস্ক' ফাঁকে।

উঠতে বসতে মহাতঙ্ক!
হয়না সহ্য আর
ভাবনা মনে প্রতিক্ষণেই
ভবসিন্ধু পার!!

কলকাতা
০১/০১/২০২২


শুভ নববর্ষ 
সোমা বিশ্বাস 

পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে
নতুন বছরের আগমন...
সকলের সৎ আশা পূরণ হোক, 
ভালো হোক সবার মন ।
দুঃখ-বিবাদ ভুলে গিয়ে
শান্তি করুক বিরাজ,
ভালো চিন্তা-ভাবনা করো
করো ভালো কাজ ।
সবাইকে ভালোবেসে
নিজেও থাকো ভালো, 
সবার জীবনে জ্বলে উঠুক
সুখ-সমৃদ্ধির আলো ।


শুভ নববর্ষ - ২
সোমা বিশ্বাস 

মন মেলেছে নতুন পাখনা নতুন আশার ছন্দে
চারিদিকে সুরভিত নববর্ষের সুগন্ধে ।

কিছুটা আশা, কিছুটা পাওয়া, কিছু স্বপ্ন মনে ।
মনই জানে না, তবুও মন অপেক্ষায় কার জন্যে ।

শীতের আমেজ শেষ না হতেই, উৎফুল্ল মন ।
মন ঘরে থেকেও ভাবছে, আছে বৃন্দাবন ।

ভালো থাকা, ভালো চাওয়া, ভালো ভাবে বাঁচা ।
ভালোবেসে সুখে থাকলে তৃপ্তি পাবে খাঁচা ।

এই আশাতেই পুরোনো বছরকে ফেলে চোখের জলে ।
নববর্ষকে স্বাগত জানাই, দুঃখ-বিবাদ ভুলে ।

বাজি-পটকার আলোয় ডেকে বরণ করি তাকে ।
"আলোর দিশা" হাজির হোক, নতুন বছরের বাঁকে ।


Comments

Popular posts from this blog

আলোর দিশা সাহিত্য পত্রিকা - জানুয়ারী সংখ্যা ২০২৪

মাটির শহর - সৌভিক দেবনাথ

কবি বিকাশ ভৌমিকের কবিতা